জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
জলের তোড়ে খড়কুটোর মতো ভেসে যাচ্ছে দোতলা বাড়ি! একতলা বাড়িগুলি ইতিমধ্যেই ডুবে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বহু মাটির বাড়িও। জলে ভাসছে বহু গ্রাম। সম্প্রতি বন্যা পরিস্থিতিতে এমনই অবস্থা হুগলির খানাকুলের।
সম্প্রতি খানাকুলের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে (যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, জলের তোড়ে চোখের পলকে ভেসে গেল দোতলা পাকা বাড়ি। ২৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়ো দেখে শিউরে উঠছেন সকলেই। ইতিমধ্যেই একাধিক পাকা বাড়ি এ ভাবেই ভেসে গিয়েছে। একতলা বাড়িগুলির ছাদ ছুঁয়েছে জল। অসংখ্য মানুষ বন্যাকবলিত। জলে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম। এমনকি ত্রাণশিবিরগুলিতেও হু হু করে ঢুকছে বন্যার জল।
গত কয়েক দিন টানা বৃষ্টি এবং ডিভিসির ছাড়া জলে ভাসছিল হুগলি। এখন বৃষ্টি থামলেও খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। গতকাল রাত পর্যন্তও বেড়েছে জলস্তর। পরিস্থিতি এমনই যে, খানাকুল থানার সামনে চলছে নৌকা। একই দৃশ্য খানাকুল বাসস্ট্যান্ডেও। সেখানেও নৌকা চলছে। খানাকুল ১ নম্বর ও ২ নম্বর বিডিও অফিস, পোস্ট অফিস, ভূমি দফতরের অফিস— সর্বত্র জল থইথই।
প্লাবিত হুগলির বলাগড়ও। অতিবৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে ভাসছে বলাগড়ের জিরাট পঞ্চায়েতের চর খয়রামারি এলাকা। জোয়ারের জলে আগেই প্লাবিত হয়েছিল চর খয়রামারির বিস্তীর্ণ এলাকা। সঙ্গে এখন বাঁধের ছাড়া জলে ফুঁসছে গঙ্গা। কালভার্ট ভেঙে গ্রামে ঢুকছে বন্যার জল। গৃহবন্দি প্রায় কয়েকশো মানুষ। ওই এলাকায় প্রায় আড়াইশো পরিবারের বসবাস। তার মধ্যে ৬০টি পরিবারকে ইতিমধ্যেই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁরা এখন রয়েছেন স্থানীয় আশুতোষ নগর প্রাইমারি বিদ্যালয়ের অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা এবং বলাগড়ের বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস। প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ওই কালভার্টের জায়গায় নতুন কাঠের সেতু নির্মাণ করা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া সকলের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু চর খয়রামারিই নয়, জল ঢুকতে শুরু করেছে বলাগড়ের শ্রীপুরের বাবুচর, সিজা কামালপুর পঞ্চায়েতের বানেশ্বরপুর, আশ্রমঘাট-সহ বেশ কয়েকটি এলাকাতেও। কোথাও ডুবেছে কৃষিজমি। ফলে চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় মাথায় হাত চাষিদের।