West Bengal Flood

বন্যাকবলিত গোটা এলাকা! প্রসূতি ও নবজাতকদের ঘাটাল হাসপাতালে প্রশাসনের উদ্যোগে আনা হচ্ছে স্পিডবোটে

পাশাপাশি, চলছে ত্রাণকার্যও। ঘাটালের প্লাবিত এলাকাগুলিতে শুকনো খাবার, ত্রিপল, ত্রাণসামগ্রী ও নানা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিতরণ করা হচ্ছে। ত্রাণকার্যে হাত মিলিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৪
নবজাতক ও প্রসূতিদের উদ্ধার করে ঘাটাল হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে।

নবজাতক ও প্রসূতিদের উদ্ধার করে ঘাটাল হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।

বন্যাকবলিত গোটা এলাকা। তার মাঝেই স্পিড বোটে করে প্রসূতিদের ঘাটাল হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে প্রসবের জন্য। যাঁরা সদ্য মা হয়েছেন, তাঁদেরও নবজাতক-সহ নিয়ে আসা হচ্ছে প্রশাসনের তৎপরতায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের বন্যাদুর্গত মানুষকে বিগত কয়েক দিন ধরে এই ভাবেই পরিষেবা দিয়ে চলেছেন অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের কর্মী ও জেলা পুলিশ।

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতেই তৎপর হন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার। পরিকল্পনা করা হয়, আগামী ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে যাঁদের প্রসবের সময় নির্ধারিত রয়েছে তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করা হবে। তার পর সেই সকল প্রসূতিদের স্পিডবোটে করে ঘাটাল হাসপাতালে নিয়ে আসা হবে প্রসবের জন্য। সেই অনুযায়ী প্রসূতিদের তালিকা তৈরি করে প্রশাসন। যদি কোনও প্রসূতি বা তাঁর পরিবার এই পরিষেবা না নিয়ে অন্যত্র প্রসবের ব্যবস্থা করতে চান প্রশাসনকে তা লিখিত ভাবে জানানোর কথাও বলা হয়। এর পর প্রসূতিদের স্পিডবোটে করে নিয়ে আসা হয় ঘাটাল হাসপাতালে। একই সঙ্গে সম্প্রতি যাঁদের বাচ্চা হয়েছে সেই সদ্যোজাতদের সঙ্গে তাদের মায়েদেরও স্পিডবোটে করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় চিকিৎসার জন্য।

পাশাপাশি চলছে ত্রাণকার্যও। ঘাটালের প্লাবিত এলাকাগুলিতে শুকনো খাবার, ত্রিপল, ত্রাণসামগ্রী ও নানা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিতরণ করছে প্রশাসন। ত্রাণকার্যে হাত মিলিয়েছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরাও। রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি, সেচ দফতরের প্রধান সচিব সুরেন্দ্র গুপ্ত, ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস-সহ প্রশাসনের বহু গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিক। একই সঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার স্পিডবোটে করে বন্যার্তদের কাছে খাবার, ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন।

ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে দুর্গতদের কাছে পৌঁছেছেন পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার।

ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে দুর্গতদের কাছে পৌঁছেছেন পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। —নিজস্ব চিত্র।

প্রসঙ্গত, নিম্নচাপের জেরে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আপাতত বন্ধ হয়েছে। কিন্তু বিরাম নেই ডিভিসির জল ছাড়ার। বৃহস্পতিবারও দামোদর উপত্যকার বিভিন্ন বাঁধ ও জলাধার থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। শুধু মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকেই মোট ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। নতুন করে জল ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের হাওড়া ও হুগলি জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই হুগলি-হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বুধবারও হুগলির পুরশুড়ায় পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দামোদর অববাহিকায় বন্যার সম্ভাবনাকে ‘ম্যান মেড’ বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় বানভাসি এলাকা পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। প্লাবিত এলাকাগুলি ঘুরে দেখার পর ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘মানুষকে এ ভাবে ডোবালে ডিভিসির সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না।’’ শুধু তা-ই নয়, এই বিষয় নিয়ে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন
Advertisement