মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। ছবি: সমাজমাধ্যম।
শনিবারের কলকাতা ডার্বিতে দুই প্রধানের দু’রকম অবস্থা। এক দিকে মোহনবাগান পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানে। অন্য দিকে ইস্টবেঙ্গল ১১ নম্বরে, দৌড়ে রয়েছে প্রথম ছয়ে শেষ করার। তবে চিরশত্রুকে কোনও ভাবেই খাটো করে দেখছেন না মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। তাঁর মতে, শনিবার জিততে না পারলে শীর্ষে থাকার কোনও মূল্য নেই।
ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে পারলে লিগ-শিল্ডের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে যাবে মোহনবাগান। তবে শীর্ষে থাকায় তাঁরা যে বাড়তি সুবিধা নিয়ে নামবেন এমনটা মনে করেন না মোলিনা। তাঁর মতে, ম্যাচটা যথেষ্ট কঠিন হতে চলেছে। তাঁর দলকে সেরা পারফরম্যান্সই দিতে হবে।
শুক্রবার মোলিনা বলেছেন, “ছেলেরা লড়াইয়ের জন্য তৈরি। আশা করি জিতব। তবে সহজে জিততে পারব না। আমরা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে রয়েছি। ওরা ১১ নম্বরে রয়েছে। হয়তো পয়েন্টের বড় ব্যবধান রয়েছে। কিন্তু সেটা পুরোটাই আইএসএলের সামগ্রিক পারফরম্যান্সের বিচারে। আমার মতে, আইএসএলে এত দিন যা কিছু করেছি তার কোনও মূল্য নেই। কাল কী করব তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে। যদি আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারি তা হলে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।”
মোলিনার সংযোজন, “গুয়াহাটিতে খেলা হচ্ছে বলে মাঠভর্তি সমর্থক হয়তো পাব না। নিঃসন্দেহে ওদের মিস্ করব। কিন্তু যারা আসবে তাদের আনন্দ দিতে চাইব। তিন পয়েন্ট নিয়ে ওদের খুশি করতে চাই।”
পঞ্জাব এবং মুম্বই ম্যাচে দু’গোলে পিছিয়ে পড়েও সমতা ফিরিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। পঞ্জাব ম্যাচ জিতলেও মুম্বই ম্যাচ হারে তারা। ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচে ফেরত আসার এই ক্ষমতা কি তাঁকে চিন্তায় রাখছে? মোলিনার জবাব, “ম্যাচটা তো ৯০ মিনিটের। আমি জানি আমার দল কী ভাবে খেলতে পারে। আমরা যদি ১০০ শতাংশ দিতে পারি তা হলে বিপক্ষ দল কী করল সেটা নিয়ে ভাবতেই হবে না। আমি শুধু নিজের দলের খেলোয়াড়দের সাহায্য করতে চাই। বাকিরা কী করতে পারে সেটা নিয়ে ভাবিত নই।”
ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দলকে কেমন ভাবে খেলাবেন তা এখন থেকেই ঠিক করে ফেলেছেন মোলিনা। তাঁর কথায়, “আমরা বাকি দলগুলির সঙ্গে যে মানসিকতা নিয়ে খেলি সে ভাবেই ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে খেলব। আমরা জানি ইস্টবেঙ্গল কেমন খেলে। কী ভাবে আক্রমণ বা রক্ষণ করে। সেই মতো আমাদেরও পরিকল্পনা তৈরি আছে। ২০ মিনিট নয়, আমার ছেলেরা যাতে ৯০ মিনিটই ১০০ শতাংশ দিতে পারে সেটা চাই। সেটাই ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেও করার চেষ্টা করব।”
তিনি স্পেনীয় হলেও কলকাতা ডার্বি নিয়ে তাঁর যে আবেগ রয়েছে সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন মোলিনা। পাশাপাশি এটাও জানিয়েছেন, আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন তিনি। মোলিনার কথায়, ‘‘পেশাদারি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আবেগ তো থাকবেই। তবে সেটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।”
ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে চোট-আঘাত চিন্তায় রেখেছে মোলিনাকে। তিনি জানিয়েছেন, অনিরুদ্ধ থাপাকে ডার্বিতে দেখা যাবে না। বলেছেন, “থাপাকে কাল পাব না। তবে চোট-আঘাত সমস্যা সামলানোর মতো যথেষ্ট খেলোয়াড় আমাদের হাতে আছে। তারাই সামলে দিতে পারবে।” দুই বিদেশিকে নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “গ্রেগ, দিমিকে পুরো ৯০ মিনিট খেলাব কি না তা এখনই বলতে পারব না। কাল সকালের আগে সেটা জানা যাবে না। ম্যাচের আগে সিদ্ধান্ত নেব।”
চোট-আঘাত সমস্যায় রয়েছে ইস্টবেঙ্গলও। তাদের মাঝমাঠের দুই বিদেশি মাদিহ তালাল ও সাউল ক্রেসপো নেই। এ ছাড়াও ভারতীয় ফুটবলারদেরও অনেকের চোট। তবে সেই নিয়ে মাথাব্যথা নেই মোহনবাগানের কোচের। বলেছেন, “প্রতিপক্ষ শিবিরের কী অবস্থা, তারা কী করবে না করবে তা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। আমি নিজের দল নিয়েই বেশি ভাবি। আমাদের ৯০ মিনিট সেরা ফুটবল খেলতে হবে, এটাই আমার কাছে শেষ কথা। আর কিছু জানি না।”