ঘৃণাভাষণের তদন্তে দিল্লি পুলিশ সঠিক ভূমিকা নেয়নি বলে অভিযোগ সুপ্রিম কোর্টের। ফাইল চিত্র।
ঘৃণাভাষণের মামলাগুলির তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে আবার অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বধীন বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক নিয়ন্ত্রিত দিল্লি পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছে, কেন ঘটনার ৫ মাস পরে এফআইআর দায়ের হয়েছিল? কেন ২ বছর পরেও গ্রেফতার হননি কোনও অভিযুক্ত, পেশ করা হয়নি চার্জশিট?
দিল্লি এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের বিরুদ্ধে সমাজকর্মী তুষার গান্ধীর দায়ের করা মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত সোমবার তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, ঘৃণাভাষণের মামলাগুলির তদন্তে কোনও স্পষ্ট অগ্রগতি হয়নি। সরকারি পরীক্ষাগারে অভিযুক্তদের কণ্ঠস্বরের নমুনার ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতেও অনেক দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
ঘটনাচক্রে, সোমবারই ঘৃণাভাষণ সংক্রান্ত অন্য একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতি কেএম জোসেফ এবং বিভি নাগারথনার বেঞ্চ বলেছে, ধর্মের প্রসঙ্গ রয়েছে এমন সমস্ত বক্তৃতাকেই ঘৃণাভাষণ বলা যায় না। সতর্ক ভাবে এ ক্ষেত্রে ফারাক নির্ধারণ করে ঘৃণাভাষণকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, ওই মামলাটি ২০১৪ সালের। সে সময় একটি নির্বাচনী প্রচারসভায় আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা খুদাকে বিশ্বাস করেন, তাঁরা বিজেপিকে ভোট দিলে খুদা ক্ষমা করবেন না।’’ কেজরীও ওই বক্তৃতাকে ‘ঘৃণাভাষণ’ হিসাবে চিহ্নিত করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করা হলেও তাতে সায় দেয়নি দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে এবং ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর হরিদ্বারে ধর্ম সংসদের আসর বসেছিল। সেখানেই একাধিক বক্তা ঘৃণাভাষণ দেন বলে অভিযোগ। ঘৃণাভাষণের পর পুলিশের তা নিয়ে নীরবতাকে প্রশ্ন করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয় মামলাও। ২০২১ সালে দিল্লি এবং হরিদ্বারে যে ধর্ম সংসদ বসেছিল তাতে বক্তাদের একাংশের ঘৃণাভাষণের প্রেক্ষিতে দিল্লি আর উত্তরাখণ্ডে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চেয়ে কয়েক মাস আগে লিখিত জবাব তলব করেছিল শীর্ষ আদালত। ওই মামলায় সমাজকর্মী তুষার গান্ধী অভিযোগ এনেছিলেন, দিল্লি ও উত্তরাখণ্ড পুলিশ তদন্তে গাফিলতি করছে।