রানাঘাটে শাসকদলের শাখার আয়োজিত বনভোজনে বিডিওর উপস্থিতি ঘিরে বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
মহিলা তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির বনভোজনের অনুষ্ঠানে সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও)-র যোগ দেওয়ার অভিযোগ তুলল বিজেপি। তা নিয়েই বৃহস্পতিবার শোরগোল পড়ল নদিয়ার রানাঘাটে। বুধবার ওই বনভোজনের অনুষ্ঠানে সংবর্ধনাও নিতে দেখা যায় বিডিও জয়দেব মণ্ডলকে। একটি রাজনৈতিক দলের শাখার আয়োজিত বনভোজনে কেন প্রশাসনিক স্তরের একজন আধিকারিক উপস্থিত হয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিজেপি। যদিও ওই বনভোজনে সাময়িক উপস্থিতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিডিও। ওই বনভোজনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া ‘ভুল হয়েছে’ বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নদিয়ার রানাঘাট ব্লকের আনুলিয়া অঞ্চলে বুধবার একটি বনভোজনের আয়োজন করেছিল মহিলা তৃণমূলের আঞ্চলিক কমিটি। বনভোজনের অনুষ্ঠানে একটি মঞ্চও তৈরি করা হয়। সেখানে শাখা সংগঠনের ফ্লেক্সে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও রয়েছে। আছে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছবিও। ফ্লেক্সে লেখা রয়েছে “আনুলিয়া অঞ্চল মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে বনভোজন অনুষ্ঠান”। এমন একটি বনভোজনে বিডিওর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি শিবির।
রানাঘাটের বিজেপি সংসদ জগন্নাথ সরকারের অভিযোগ, “বিডিও এখানে তৃণমূলের দলদাসের মতো আচরণ করেন। রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বিডিও হাজির হয়ে সংবর্ধনাও নেন। সরকারি পদে থেকে এই কাজের আমরা চরম নিন্দা করছি।’’ বিষয়টি নিয়ে অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন এলাকার বিডিও। বনভোজনের অনুষ্ঠানে উপস্থিতির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, “অন্য একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। মহিলা কর্মীরা অনুরোধ করলে সেখানে একটু দাঁড়াই। তবে যাওয়াটা ভুল হয়েছে।” এই বিতর্কের মাঝে তৃণমূল শিবিরের অবশ্য বক্তব্য, সামাজিক অনুষ্ঠানে অরাজনৈতিক মানুষেরা থাকতেই পারেন। তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সামাজিক অনুষ্ঠানে অনেক অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত থাকেন। উপস্থিতির পর তাঁদের ভূমিকা কী, সেটাই হচ্ছে বড় প্রশ্ন। আমার মনে হয় না তিনি (বিডিও) কোনও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।”
বিষয়টিকে বিডিওর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কী ভাবে দেখছেন, তা জানতে রানাঘাটের মহাকুমাশাসক ভরত কুমার সিংহের সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।