Eknath Shinde

উদ্ধবের থেকে বৃহন্মুম্বই পুরসভা দখল করতে সক্রিয় শিন্ডে, চিঠি দিলেন শিবসেনা শাখাপ্রমুখদের

মহারাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা হাতছাড়া হলেও এখনও দেশের বৃহত্তম পুরসভা মুম্বই (যার পোশাকি নাম বৃহন্মুম্বই পুরসভা বা বিএমসি) এখনও উদ্বব শিবিরের দখলে রয়েছে।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৩২
Shiv Sena leader Eknath Shinde starts the process to take control of Brihanmumbai Municipal Corporation

উদ্ধব গোষ্ঠীর থেকে বিএমসির দখল ছিনিয়ে নিতে সক্রিয় শিন্ডে। ফাইল চিত্র।

শিবসেনা পরিষদীয় দলের অন্দরে সংখ্যালঘু হয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারিয়েছিলেন ৮ মাস আগে। গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ‘শিবসেনা’ নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক তিন-ধনুক ব্যবহারের উপরেও অধিকার হারিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। এই পরিস্থিতিতে প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরের পুত্র সোমবার বলেন, ‘‘বিশ্বাসঘাতকদের হাতে দলের নাম এবং প্রতীক তুলে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।’’

সোমবার মুম্বইয়ের দাদরে শিবসেনা ভবনে তাঁর অনুগামীদের সভায় উদ্ধব জানান, মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের শিবির বালাসাহেব প্রতিষ্ঠিত দলের সদর দফতর দখলের চেষ্টা চালালে সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিরোধ করা হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ এখন ‘শিবসেনা’ নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘তির-ধনুক’ ব্যবহারের অধিকারী শিন্ডে শিবির। কিন্তু মরাঠী ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে তারা এখনই শিবসেনা ভবন দখলের জন্য সক্রিয় হবে না বলে শিন্ডে শিবিরের একটি সূত্র জানাচ্ছে।

Advertisement

তবে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রিত্ব এবং শিবসেনার দখল ছিনিয়ে নেওয়ার পরে রাজনৈতিক ভাবে উদ্ধবকে আরও কোণঠাসা করতে সক্রিয় হয়েছে শিন্ডে শিবির। রাজ্যের শাসনক্ষমতা হাতছাড়া হলেও এখনও দেশের বৃহত্তম পুরসভা মুম্বই (যার পোশাকি নাম বৃহন্মুম্বই পুরসভা বা বিএমসি) এখনও উদ্বব শিবিরের দখলে রয়েছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বিএমসির শিবসেনা কর্পোরেটর (কাউন্সিলর) এবং ২৭৭ জন শাখাপ্রমুখকে ‘নির্দেশ মানার’ বার্তা পাঠিয়েছে শিন্ডে শিবির। শিন্ডে শিবিরের কর্পোরেটরা শীঘ্রই একজোট হয়ে বিএমসি দফতরে গিয়ে ‘শিবসেনার’ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবেন বলে ক্ষমতাসীন শিবির সূত্রের খবর।

শিবসেনার নাম এবং দলীয় তির-ধনুক প্রতীক ব্যবহারের অধিকার একনাথ শিন্ডে শিবিরের হাতে তুলে দেওয়ার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানোর কথা জানিয়েছে উদ্ধব শিবির। সোমবার প্রথম শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ মামলাটি দ্রুত শুনানির জন্য সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। উদ্ধব শিবিররে যুক্তি বিদ্রোহের সূচনাপর্বেই শিন্ডে-সহ ১৫ জন নেতাকে বরখাস্ত করা হলেও, এত দিন দু’পক্ষকেই দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিল কমিশন। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় উপনির্বাচনের আগে এক অন্তবর্তীকালীন রায়ে কমিশন জানায়, জ্বলন্ত মশালের প্রতীক নিয়ে লড়বে উদ্ধবের দল ‘শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে)’ । অন্য দিকে, শিন্ডে শিবির ‘বালাসাহেবঞ্চি শিবসেনা’ নাম এবং জোড়া তরোয়াল-ঢাল প্রতীক পেয়েছিল। শুক্রবার সেই বিবাদের নিষ্পত্তি ঘটাতে ৭৮ পাতার নির্দেশনামায় শিন্ডে শিবিরকেই নাম-প্রতীকের অধিকার তুলে দিয়েছে।

কমিশনের পর্যবেক্ষণ, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত শিবসেনার বর্তমান দলীয় সংবিধান অগণতান্ত্রিক। ষাটের দশকে হিন্দুত্ববাদী আদর্শ ও মরাঠি অধিকার রক্ষায় শিবসেনার প্রতিষ্ঠা করেন বালাসাহেব। কমিশনের চাপে ১৯৯৯ সালে বালাসাহেব দলীয় সংবিধানে কিছু গণতান্ত্রিক রীতিনীতি যোগ করেছিলেন। ২০১৮ সালে শিবসেনা তাদের দলীয় সংবিধান ফের সংশোধন করে। কিন্তু তা ভারতীয় নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়নি। অভিযোগ, নয়া সংশোধনীতে গণতান্ত্রিক নিয়মগুলি বাতিল করায় দলটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সংস্থার মতো হয়ে উঠেছিল।

যদিও উদ্ধব শিবিরের সাংসদ সঞ্জয় রাউতের দাবি, শিন্ডে শিবিরকে শিবসেনার নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার নেপথ্যে ২০০০ কোটি টাকার ‘খেলা’ হয়েছে। যথাসময়ে সুপ্রিম কোর্টে তাঁরা এর প্রমাণ দেবেন বলেও দাবি করেন সঞ্জয়। জবাবে শিন্ডে সোমবার বলেন, ‘‘সঞ্জয় এক জন পাগল।’’ শিবসেনার নাম এবং প্রতীক পাওয়ায় পর মঙ্গলবার প্রথম দলের বিধায়কদের বৈঠকে ডেকেছেন শিন্ডে।

আরও পড়ুন
Advertisement