শুধু যোগা ম্যাট আর ঘরের একটি দেওয়াল থাকলেই করে ফেলা যায় ওয়াল পিলাটেজ়। ছবি: সংগৃহীত।
জিমে গিয়ে গা ঘামিয়ে শরীরচর্চা করতে পছন্দ করেন না অনেকেই। দেহের ওজনের চেয়ে ভারী যন্ত্রের ব্যবহার করা সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। জোর করে সেই সব ভার তুলতে গেলে শরীরের কলকব্জা নড়ে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। তবে শরীরের সার্বিক অঙ্গ সঞ্চালন কিংবা দেহের শক্তি বাড়িয়ে তোলার জন্য সারা দিনের মধ্যে থেকে মাত্র ৩০ মিনিট বাঁচিয়ে যদি ওয়াল পিলাটেজ় অভ্যাস করা যায়, তা হলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। আর এই ব্যায়াম করতে বেশি জিনিসপত্রের প্রয়োজন হয় না। শুধু যোগা ম্যাট আর ঘরের একটি দেওয়াল থাকলেই হল।
হাঁটাচলা, মাটিতে বসা বা ওঠার মতো অতি সাধারণ কাজগুলি বেশি বয়সেও যাতে সহজে, সাবলীল ভাবে করা যায়, সেই উদ্দেশ্যেই পিলাটেজ় অভ্যাস করা। পিলাটেজ়ে রয়েছে একাধিক স্তর, যা দেহের পেশিগুলিকে মজবুত করতে সাহায্য করে। তাই কোনও রকম চোট-আঘাত সারিয়ে তুলতে চিকিৎসকেরা পিলাটেজ়ের উপরেই জোর দেন। তা ছাড়া এ ধরনের শরীরচর্চা অন্তঃসত্ত্বা বা নতুন মায়েদের জন্যও একেবারেই নিরাপদ। প্রসবের পর মহিলাদের পেট এবং কোমরের পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। কোনও দুর্ঘটনায় পায়ের লিগামেন্ট বা পেশিতে চোট লাগতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে শুধু যোগাসন তেমন ফলদায়ী হয় না বলেই মনে করেন প্রশিক্ষকেরা। এ সব ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে কাজ করে পিলাটেজ়। শরীরচর্চা করার আলাদা ধরনের জুতো বা পোশাক, কোনওটিই প্রয়োজন হয় না এতে। এটি যন্ত্রনির্ভরও নয়। যোগাসনের মতো মাটিতে শুয়ে অভ্যাস করতে হয় এই ব্যায়াম। সুতরাং বয়স্কদের শরীরচর্চা করতেও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
কী ভাবে করবেন পিলাটেজ়?
ভঙ্গি-১
১) প্রথমে ম্যাটের উপর যে কোনও এক পাশ ফিরে শুয়ে পড়ুন।
২) পা যেন একেবারে দেওয়াল স্পর্শ করে থাকে।
৩) এ বার ডান হাতের উপর ভর দিয়ে দেহের উপরিভাগ মাটি থেকে শূন্যে তুলে ধরুন।
৪) কনুই এবং পায়ের পাতা দিয়ে দেওয়ালের ভর রাখার চেষ্টা করুন।
৫) যে হাত মাটিতে রেখেছেন, তার উল্টো হাতটি কোমরে রাখুন।
৬) এই অবস্থায় একবার ওঠবস করার চেষ্টা করুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করবেন।
৭) প্রথমে ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত করার চেষ্টা করুন। অভ্যাস হয়ে গেলে তার পর সময় বাড়াতে পারেন। খুব তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন নেই।
ভঙ্গি-২
১) হাঁটু সামান্য ভাঁজ করে দেওয়ালে দু’পায়ের পাতা তুলে রাখুন।
২) পা থেকে কোমর যেন ব্রিজ পজ়িশনে থাকে। দু’হাত রাখবেন দেহের দু’পাশে।
৩) এ বার মাটি থেকে কোমর এক বার তুলে ধরুন আবার মাটিতে রাখুন।
৪) অনেকটা সেতুবন্ধনাসনের মতোই। তবে এই ভঙ্গিমায় পায়ের পাতা দেওয়ালে রাখা থাকে।
৫) পুরো পদ্ধতিটাই অত্যন্ত ধীর লয়ে করবেন। না হলে দেওয়াল থেকে পা পিছলে যেতে পারে।
ভঙ্গি-৩
১) ম্য়াটের উপর যে কোনও এক পাশ ফিরে শুয়ে পড়ুন। দেওয়ালে পায়ের পাতা যেন স্পর্শ করে থাকে।
২) এ বার এক হাত ভাঁজ করে ঘাড়ের কাছে রাখুন।
৩) দেওয়ালের উপর এক পা রেখে, অন্য পা হাঁটার ভঙ্গিতে এক বার সামনে এক বার পিছনে সঞ্চালন করুন। পাঁচ বার করে এক একটি পায়ে এই ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন।
৪) নিশ্বাস স্বাভাবিক রেখে, পেট এবং নিতম্বের পেশিকে কাজে লাগানোর করার চেষ্টা করুন।