ছবি: সংগৃহীত।
পুজোর আগে তো হল না, তবে উৎসবের পর্ব মিটে গেলেই জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করবেন। বছর ৫০-এর বাবাকেও সঙ্গে নেবেন বলে মনস্থ করেছেন। কিন্তু চারদিকে ছোট-বড় নানা ঘটনা শুনে ভয়ও পান। জিম করতে করতেই প্রাণ হারিয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। সাধারণ মানুষ থেকে বলিউডের তারকা— অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে শরীরচর্চা করতে গিয়ে। তা হলে যে কেউ জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করতে পারেন না? চিকিৎসকেরা বলছেন, বয়সের সঙ্গে জিমে গিয়ে শরীরচর্চার কোনও বিরোধ নেই। বয়স্করাও তা নিয়মিত করতে পারেন। কিন্তু কার শারীরিক অবস্থা কেমন, তা না দেখে জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করার অনুমতি সকলকে দেওয়া যায় না। তাই জিমে যোগ দেওয়ার আগে কয়েকটি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া বিশেষ ভাবে প্রয়োজন।
১) উচ্চ রক্তচাপ
জিমে যাওয়ার আগে পারলে বা়ড়িতেই এক বার রক্তচাপ মেপে নিন। বয়স্কদের তো বটেই, নিজের রক্তচাপের মাত্রাও কমছে না বাড়ছে, সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। রক্তের চাপ খুব বেশি অথবা খুব কম হয়ে গেলে জিমে যাওয়া একেবারেই ঠিক নয়।
২) রক্তে শর্করার মাত্রা
রক্তচাপ মাপার যন্ত্রের মতোই রক্তে শর্করার মাত্রাও কিন্তু প্রাথমিক ভাবে বাড়িতেই মেপে নেওয়া যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে গেলেও অনেক সময় শারীরিক নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই অবস্থায় জিমে গিয়ে গা ঘামানো মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। খাবার খাওয়ার আগে রক্তে শর্করার মাত্রা যদি প্রতি ডেসিলিটারে ১০০ মিলিগ্রাম মতো থাকলে বুঝতে হবে, তা নিরাপদ। সুতরাং সে দিন জিম করলে শারীরিক কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
৩) লিপিড প্রোফাইল
এই পরীক্ষা বড়িতে করা যাবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। রক্তে এইচডিএল, এলডিএল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের আশঙ্কা কমে। ফলে জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করতে করতে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার ভয় এড়ানো যায়।
৪) ইলেকট্রকার্ডিয়োগ্রাম
জিমে যোগ দেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে ইলেকট্রকার্ডিয়োগ্রাম করে রাখলেও ভাল। তা ছাড়া, আজকাল স্মার্টওয়াচের মাধ্যমেও হৃদ্স্পন্দন মাপা যায়। শরীরচর্চা করার সময়ে এই বিষয়টিও নজরে থাকা প্রয়োজন।
৫) ইকোকার্ডিয়োগ্রাম
শরীরচর্চা কিংবা খেলাধুলা করতে গিয়ে হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে কি না, তা নির্ধারণ করে দিতে সাহায্য করে ইকোকার্ডিয়োগ্রাম। বয়স নির্বিশেষে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক হতে পারে সকলেরই। তাই জিমে যোগ দেওয়ার আগে আগাম এই পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভাল।
৬) ভিটামিন ডি
জিমে গিয়ে ভারী ভারী যন্ত্রপাতি তুলবেন, কিন্তু হাড়ের জোর আছে কি না, তা দেখে নিতে হবে না? রক্তে ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম কিংবা পটাশিয়ামের পরিমাণ কম থাকলে ওজন তুলতে গিয়ে কোমরের হাড়ে চোট পেলেও পেতে পারেন। পেশিতে টান লাগাও অস্বাভাবিক নয়।
৭) হিমোগ্লোবিন
রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। যা শরীরচর্চা করাকালীন নানা রকম শারীরিক সমস্যার উদ্রেক ঘটাতেই পারে। কঠোর পরিশ্রম করার ক্ষমতা থাকে না। শরীরচর্চা করতে গিয়ে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।