ইয়ামি গৌতম এবং সানি কৌশল অভিনীত এই ছবি ত্রুটিমুক্ত নয়। ছবি: সংগৃহীত।
প্রচ্ছদ দেখে কোনও বইকে বিচার করা উচিত নয়। সিনেমার ক্ষেত্রেও কথাটা একই ভাবে প্রযোজ্য। তথাকথিত ‘ছোট’ ছবি। নেই প্রথম সারির তারকা। কিন্তু চিত্রনাট্য দর্শকের মধ্যে শেষ দৃশ্য পর্যন্ত বেঁধে রাখে কৌতূহল। অজয় সিংহ পরিচালিত এবং ওটিটিতে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘চোর নিকল কে ভাগা’ ছবিটির ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। তবে ইয়ামি গৌতম এবং সানি কৌশল অভিনীত এই ছবি ত্রুটিমুক্ত নয়।
বিমানসেবিকা নেহার (ইয়ামি গৌতম) সঙ্গে ব্যবসায়ী অঙ্কিতের (সানি কৌশল) দেখা হয়। ধীরে ধীরে সম্পর্ক প্রেমের পথে এগোয়। এক সময় নেহা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় যুগল। এই পর্যন্ত পড়ে মনে হতেই পারে, বলিউডের চিরকালীন ‘ফর্মুলা’ মেনেই পরিচালক তৈরি করেছেন ছবিটি। কিন্তু সিরাজ আহমেদ এবং অমর কৌশিকের লেখা চিত্রনাট্যে রয়েছে একের পর এক চমক। যা এই ছবির একাধিক নির্মাণ-খামতিকে ঢেকে দিয়েছে।
বিদেশি ‘হাইস্ট থ্রিলার’-এর ছকে গল্প এগিয়েছে। তাই খুব বেশি খোলসা করা উচিত নয়। অঙ্কিত ব্যবসায়ী। পাওনাদারের কাছে তার ২০ কোটি টাকা দেনা। সেই দেনা মেটাতে নেহার সঙ্গে একশো কুড়ি কোটির হিরে চুরির ফন্দি আঁটে সে। পুরো কাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছেন দিল্লির এক মন্ত্রী। চুরি করতে হবে, তবে মাঝ আকাশে। কিন্তু দু’জনের উদ্দেশ্য সফল হওয়ার আগেই বিমান হাইজ্যাক করে সন্ত্রাসবাদীরা।
সম্প্রতি, ওটিটিতে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লস্ট’ ছবিতে ইয়ামির অভিনয় দর্শকদের নজর কেড়েছিল। সাম্প্রতিক অতীতে অভিনেত্রীর ছবি নির্বাচন কৌশলও চর্চায় রয়েছে। এই ছবিতেও শেষ পর্যন্ত একাই ছক্কা হাঁকিয়েছেন ইয়ামি। ভিকি কৌশলের তুতো ভাই সানিও মন্দ নন। কিন্তু চরিত্রগুলির সঙ্গে যেন একাত্ম হওয়া যায় না। ছোট ছোট চরিত্রে বরুণ চন্দ, এবং ‘র’-এর অফিসারের চরিত্রে শরদ কেলকর দর্শকের আগ্রহ ধরে রেখেছেন। তবে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তর চরিত্রটিকে বিশেষ জায়গা দেওয়া হয়নি।
বিদেশে এই ধরনের ছবি তৈরির নেপথ্যে যে গবেষণা থাকে, এই ছবিতে তা আশা করা উচিত হবে না। ফলে ছবি দেখতে বসে কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না। সম্পর্কে এগোনোর আগে অঙ্কিতের অতীত কেন জানতে চাইল না নেহা? বহুমূল্য হিরে স্রেফ ব্রিফকেসে ভরে বিমানে সফর করা যায় কি? ‘হাইজ্যাক’-এর পিছনে যে দীর্ঘ পরিকল্পনা দেখানো হয়েছে, তার মধ্যেও সরলীকরণ করা হয়েছে। বিমান অপহরণ বা হিরে চুরির মধ্যেও উল্লেখযোগ্য নাটকীয়তা অনুপস্থিত। অন্য দিকে, বাকি বিমানযাত্রীদেরও নেহাত ‘প্রপ’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যথায় গতানুগতিক ‘টেক অফ’ সত্ত্বেও ছবিটির ‘ল্যান্ডিং’ আরও ভাল হতে পারত। তবুও ছবির শেষ মিনিট কুড়িতেই লুকিয়ে রয়েছে আসল চমক। এ যাত্রায় না হয় চোরের উপর বাটপারি হল, সিক্যুয়েল তৈরি হলে চোর আরও স্মার্ট হতে না পারলে মুশকিল।