ক্রীড়া প্রতিযোগিতার খরচ কোথা থেকে আসবে, সেই নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন প্রাথমিক স্কুলগুলি। —প্রতীকী চিত্র।
প্রাথমিক স্কুলগুলির বাৎসরিক ক্রীড়া শুরু হয়ে গেল। যদিও অভিযোগ, এই প্রতিযোগিতা চালানোর জন্য এখনও টাকা পায়নি প্রাথমিক স্কুলগুলি। প্রাথমিকের শিক্ষকদের মতে, এমনিতেই কম্পোজ়িট গ্রান্ট না পাওয়ায় ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা বেশির ভাগ স্কুলেরই। তার মধ্যে আবার এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার খরচ কোথা থেকে আসবে, সেই নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন তাঁরা।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে অঞ্চল বা চক্র পর্যায়ে ১০-২০ জানুয়ারি, মহকুমা পর্যায়ে ২২-২৭ জানুয়ারি এবং জেলা পর্যায়ে ২৯ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করতে হবে। এর পরে হবে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতা।
শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সব থেকে বেশি প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে একদম প্রাথমিক পর্যায়ে, অর্থাৎ অঞ্চল স্তরে। একটা অঞ্চলে ১০ থেকে ২০টা স্কুল থাকে। ওই অঞ্চলের সব ক’টি স্কুলের খেলা একটা মাঠে হয়। মোট ৩৪টি ইভেন্ট বা খেলা হয়। ওই অঞ্চলের প্রতিটি স্কুলই তাদের প্রতিনিধিদের অঞ্চল স্তরের প্রতিযোগিতায় পাঠায়। স্বাভাবিক ভাবেই ৩৪টি ইভেন্টে প্রচুর পড়ুয়া অংশগ্রহণ করে। উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক ভাস্কর ঘোষ বলেন, “এই রকম একটা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সংগঠিত করতে গেলে সারা দিন চলে যায়। তার খরচও আছে প্রচুর। খেলার পুরস্কার থেকে শুরু করে ছোট-ছোট যে সব পড়ুয়া খেলায় অংশগ্রহণ করল তাদের টিফিন, মাইক ভাড়া, মাঠ পরিষ্কার, দৌড়নোর ট্র্যাক তৈরি করা-সহ নানা ধরনের খরচ আছে। এই খরচ আগে না দিয়ে কী ভাবে খেলা শুরু করে দিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা দফতর?’’
যদিও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের দাবি, ‘‘প্রতি বারই টাকা আসতে একটু দেরি হয়। আমরা নিজস্ব তহবিল থেকে টাকা দিয়ে দিই।” বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডার অভিযোগ, “টাকা বরাদ্দ হয় ব্লক স্তরের খেলা থেকে। অঞ্চল স্তরে যে খেলা হয়, তার টাকা পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়।”
শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আগামী সপ্তাহে মকর সংক্রান্তি। রয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিশেষ উৎসব। শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর অভিযোগ, “গ্রামাঞ্চলে, বিশেষ করে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এলাকায় পুরো সপ্তাহ জুড়ে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি খুব কম থাকে। যারা বেশি করে খেলায় অংশগ্রহণ করে তারাই যদি না-থাকে, এই খেলার কোনও গুরুত্ব থাকে না। খেলার সময়সূচি স্থির করার আগে এই বিষয়টাও শিক্ষা দফতরের মাথায় রাখা দরকার ছিল।”