Tu Jhoothi Main Makkaar Review

কেমন হল রণবীর-শ্রদ্ধার প্রথম ছবি ‘তু ঝুঠি ম্যায় মক্কার’? পড়ুন আনন্দবাজার অনলাইনে

রণবীর কপূরের সঙ্গে শ্রদ্ধা কপূরের রসায়ন। কখনও মজাদার, কখনও একঘেয়ে। ছবি সম্ভাব্য ব্লকবাস্টার। তবে সেই পথ মসৃণ নয়।

Advertisement
অভিনন্দন দত্ত
শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৩ ১৭:২৫
Review of film Tu Jhoothi Main Makkaar Starring Ranbir Kapoor and Shraddha Kapoor

ছবিতে একাধিক দৃশ্যে রণবীরের সঙ্গে শ্রদ্ধার রসায়ন বেশ উপভোগ্য। ছবি: সংগৃহীত।

প্রিয় রেস্তরাঁর সুস্বাদু খাবার বার বার খেতে ভাল লাগবে না। তবে মাঝেমধ্যে তো তার স্বাদ নিতেই আবার ফিরে আসা। হালের বলিউড ছবির ক্ষেত্রেও বিষয়টা কিছুটা হলেও প্রযোজ্য। বিগত কয়েক বছরে পর্দায় ‘বাস্তবতা’র নামে হিন্দি ছবি যেন একটু বেশি সিরিয়াস পথে হাঁটছে। সেখানে একটু পরিচিত ‘রোম্যান্স’ ফিরে এলে মন্দ হয় না। রণবীর কপূর এবং শ্রদ্ধা কপূরকে নিয়ে লভ রঞ্জনের নতুন রোম্যান্টিক কমেডি ‘তু ঝুঠি ম্যায় মক্কার’ দর্শককে বলিউডের সেই পরিচিত রেস্তরাঁর রসুইঘরে হাজির করে। কিন্তু প্রসিদ্ধ রাঁধুনিও কখনও কখনও খাবারে নুন কম বা বেশি দিয়ে ফেলেন!

পরিচিত গল্প। বিশেষ কোনও চমক নেই। তবে পরিবেশনে রয়েছে আধুনিকতা। সংক্ষেপে ‘তু ঝুঠি...’র নির্যাস এটাই। গল্পের প্রেক্ষাপট দিল্লি। মিকি (রণবীর কপূর) উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে। পারিবারিক ব্যবসা সামলায়। বিদেশে বন্ধুর বিয়ের ব্যাচেলর পার্টিতে তিন্নি’র (শ্রদ্ধা কপূর) সঙ্গে তার দেখা। তিন্নি স্বাধীনচেতা, কর্পোরেট চাকুরে। দু’জনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও আলাদা। কিন্তু তবুও ‘বলিউড’ ফর্মুলায় তারা প্রেমে পড়ে। সেই প্রেম পূর্ণতা পাবে কি না, তা নিয়েই ছবি। ওহ... বলা হল না, মিকি তার বন্ধুর সঙ্গে মিলে বিভিন্ন জুটির বিচ্ছেদ করানোর ব্যবসাও করে!

Advertisement
Bollywood Actor Ranbir Kapoor

দীর্ঘ দিন পর রণবীর তাঁর চেনা ময়দানে ফিরেছেন। ব্যাটিংও করেছেন চালিয়ে। ছবি: সংগৃহীত।

আগে ভাল দিকে আসা যাক। রণবীর-শ্রদ্ধাকে জুটি হিসেবে পর্দায় দেখতে খারাপ লাগে না। ছবিতে নতুন প্রজন্মের পাশাপাশি যৌথ পরিবারের মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গোটা চারেক জমাটি গানও রয়েছে। সব মিলিয়ে ছুটির মরসুমে সপরিবারে দর্শককে প্রেক্ষাগৃহে টানতে কোনও মশলা কম রাখেননি পরিচালক।

এই ছবির সংলাপে রয়েছে পরিচালকের আগের ছবি ‘পেয়ার কা পঞ্চনামা’ বা ‘সোনু কে টিটু কি সুইটি’র ছোঁয়া। দীর্ঘ দিন পর রণবীর তাঁর চেনা ময়দানে ফিরেছেন। ব্যাটিংও করেছেন চালিয়ে। ক্যাসানোভা ইমেজ বা আবেগপ্রবণ দৃশ্যে তাঁর অভিনয় মনে করায় ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ বা ‘তামাশা’র মতো ছবির কথা। তবে কোথাও কোথাও তাল কেটেছে। তার দোষ অবশ্য চিত্রনাট্যের। নায়িকার মন পেতে নায়কের মুখে জোর করে একগাদা মাখো মাখো সংলাপ চাপিয়ে দিলেই যে ছবি খুব এগিয়ে যায় না, তা হয়তো নির্মাতারা ভুলে গিয়েছেন।

Bollywood actress Shraddha Kapoor

শ্রদ্ধার চোখ থেকে জল গড়ালেই তাঁর অভিনয় আরোপিত মনে হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

এই ধরনের ছবিতে রণবীর অভিজ্ঞ। শ্রদ্ধা কিন্তু সেখানে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন। পর্দায় তাঁকে যতটা ভাল লেগেছে, যখনই চোখ থেকে জল গড়িয়েছে তখনই তা আরোপিত মনে হয়েছে। অন্য দিকে, ছবিতে মিকির বন্ধু ডাব্বাসের চরিত্রে স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান অনুভব সিংহ বস্‌সি বেশ সপ্রতিভ। ছবিতে বেশ কিছু মজাদার সংলাপ তাঁর মুখ থেকেই এসেছে। এ ছাড়াও ভাল লাগে মিকির মায়ের চরিত্রে ডিম্পল কাপাডিয়ার মজাদার অভিনয়। তাঁর সাবলীল অভিনয় আর পাঁচটা পরিবারের মায়েদের দৈনন্দিন সাংসারিক যুদ্ধকেই মনে করায়। বিপরীতে বনি কপূরের মতো অভিনেতাকে খুবই কম জায়গা দেওয়া হয়েছে। কার্তিক আরিয়ান এবং নুসরত ভারুচার ক্যামিয়ো না থাকলেও ক্ষতি ছিল না।

লভ রঞ্জনের ছবিতে তরুণ প্রজন্মের প্রেমকে যে ভাবে দেখানো হয়, এখানেও তার অন্যথা হয়নি। রয়েছে নারীবিদ্বেষী সংলাপ। তাঁর ছবিতে বাচ্চারাও মদ্যপান করে! কিন্তু এ সবকে তো তিনি বিশেষ পাত্তা দেন না। ছবির ক্লান্তিকর প্রথমার্ধে মিকি এবং তিন্নির প্রেমকাহিনি সে ভাবে জমেনি। বরং দ্বিতীয়ার্ধ অনেক বেশি গতিময়। আবার ছবির পরিণতিও অনুমান করাটা কঠিন নয়। ফলে ছবি জুড়ে কৌতূহল সমান ভাবে বজায় থাকে না। তবে শেষ মিনিট কুড়ির জন্যই ছবিটা এক বার অন্তত দেখা যায়। পরিচালক শুরু থেকে এই গতি এবং নির্মাণকে গুরুত্ব দিলে হয়তো ‘তু ঝুঠি...’ আরও উপভোগ্য হয়ে উঠত।

Advertisement
আরও পড়ুন