Celebrity Durga Puja

কেউ ভোগে দেন মাছ-মাংস, টলিপাড়ার কোন তারকারা পুজোয় আমিষ ছাড়া ভাবতেই পারেন না?

অষ্টমীতে নিরামিষ নয়, বরং জমিয়ে আমিষ খেয়েই রসনা তৃপ্ত করেন টলিপাড়ার যে তারকারা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৪ ১১:২৭
(বাঁ দিকে) সুদীপা চট্টোপাধ্যায়, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, রাহুল অরুণোদয়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।

(বাঁ দিকে) সুদীপা চট্টোপাধ্যায়, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, রাহুল অরুণোদয়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। গ্রাফিক : শৌভিক দেবনাথ।

পুজো মানেই কিন্তু জমিয়ে ভূরিভোজ। আনন্দ-হুল্লোড়, ঠাকুর দেখা তো রয়েছেই, সঙ্গে চলে পেটপুজো। এ ক্ষেত্রে কেউ পছন্দ করেন বাহারি রেস্তরাঁ, কারও ভাল লাগে অভিজাত হোটেলের পরিবেশ। আবার কেউ কেউ ভালবাসেন এই ক'টা দিন রাস্তা দু-ধারে বসা রকমারি খাবার চেখে দেখতে। কিন্তু, অষ্টমীতে অনেক বাড়িতেই নিরামিষ খাওয়ার চল রয়েছে। সে দিন আর বাইরের খাবার নয়। সকাল থেকে ফল-প্রসাদ, ভোগ খাওয়ার পর দুপুরে অনেকে খিচুড়ি ভোগ চাটনি সহযোগে খেয়ে থাকেন। আবার টলিপাড়ার একঝাঁক তারকা পুজোয় চারটি দিন, সে অষ্টমী হোক কিংবা নবমী, নিরামিষ খান না একেবারেই। যেমন, জনপ্রিয় অভিনেত্রী, সঞ্চালিকা সুদীপা চট্টোপাধ্যায় তাঁর বাড়ির প্রতিমাকে সাত রকম মাছ থেকে মাংস, সবই ভোগে দেন। এই খাবার ছাড়া পুজোই অসম্পূর্ণ তাঁর। অষ্টমীতে আমিষেই ঝোঁক রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়দের। কী কারণে নিরামিষের ধারেকাছে যান না তাঁরা?

Advertisement

সুদীপা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে 'ত্রিবেণী মতে' অর্থাৎ, তিনটি মতে পুজো হয়। ষষ্ঠী থেকে সপ্তমী পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। সপ্তমীতে শিব আসেন। ওই দিন থেকে অষ্টমীর আগে পর্যন্ত শৈব মতে পুজো হয়। অষ্টমী পুরোটাই শৈব ও বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। তার পর বলিদান হয়ে গেলে সন্ধিপুজো আর তার পর থেকেই তন্ত্র মতে বাকি পুজো হয়। নবমীর পর নারায়ণ তুলে নেওয়া হয়। তার পর দেবীকে মাছ-মুখ করানো হয়। সাত রকমের মাছ ও পেঁয়াজ-রসুন ছাড়া পাঁঠার মাংস দেওয়া হয়। দশমীর দিনও গঙ্গার ইলিশ খেয়ে মাছ মুখ করেই বিদায় দেওয়া হয় প্রতিমাকে। সুদীপার কথায়, ‘‘মা তো সধবা, তাই মাছ না খাইয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো হয় না। ’’ যদিও সুদীপার বাড়ির মাংসের বিশেষত্ব রয়েছে। পেঁয়াজ রসুন, টম্যাটো ছাড়াই হয় রান্না। আদা গরম মশলার সঙ্গে বেটে দেওয়া হয় বাংলাদেশের চিনিগুঁড়ো চাল আর তাতেই আসে স্বাদ। এ বছর যেহেতু অষ্টমী, নবমী একই দিনে, তাই অন্ন ভোগ ও মাছ ভোগ দেওয়া এবং সবটা গুছিয়ে উঠতে পারার তাড়াও বেশি থাকবে।

অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য নিরামিষ ব্যাপারটা পুজোয় সময় তাঁর যে চলে না, সেটাই জানিয়েছেন। রাহুলের কথায়, ‘‘পুজোর সময় রাস্তার ধারের স্টলগুলো থেকে এগ রোলের গন্ধ বের হয়। সেটা পৃথিবীর অন্য যে কোনও খাবারের থেকে ভাল। এটা এড়িয়ে বাঙালি হিসেবে পুজো কাটানো মুশকিল।’’ অভিনেতা এ-ও জানান, অষ্টমী হোক কিংবা নবমী, পুজোর সময় ভাতের সঙ্গে মটনের আলু ঝোল থাকলে, সেটা খেয়েই পুজো কেটে যাবে তাঁর। ছোটবেলা থেকে মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা রাহুল পুজোর সময় বাবা-মায়ের সঙ্গে অষ্টমীর দিনে রেস্তোরাঁয় খেতে যেতেন। সেখানে গিয়ে নিরামিষ খাওয়ার প্রশ্নই উঠত না। রাহুলের কথায়, ‘‘ এমন একটা পরিবার থেকে বড় হয়ে উঠেছি, বছরে একটা দিন রেস্তরাঁয় যাওয়ার সুযোগ হত। সেখানে গিয়ে টাকা দিয়ে পনির খেতে পারব না।’’ তবে অভিনেতার পুজো অসম্পূর্ণ গাওয়া ঘিয়ে ভাজা চিংড়ির কাটলেট ছাড়া।

অভিনেত্রী বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়ের হাজরার বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। সে ক'দিন বাড়িতে একেবারেই নিরামিষ। কিন্তু, অভিনেত্রী নিজে অবশ্য বাইরে পুজোর সময় সবই খান। খুব বেশি বাছবিচার করেন না। বাড়িতে থাকলে সকালে লুচি, আলুর তরকারি মিষ্টি, দুপুরে খান নিরামিষ পোলাও। তবে বাইরে বেরোলে মটন বিরিয়ানি ও মটন রেজালা তাঁর চাই-ই।

অষ্টমীতে নিরমিষ শুনেই মুখের আকৃতি বদলে গেল অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি সারা বছর চিকেনের উপরেই থাকেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পুজোয় নিরামিষ খাওয়া তাঁর কাছে প্রশ্নাতীত। অনিন্দ্যের কথায়, "পুজোর সকাল-বিকেল চেষ্টা করি আমিষ খাওয়ার। কারণ, আমার আমিষ খেতে ভাল লাগে। বহু বছর এমনিতেই অষ্টমীতে অঞ্জলি দিই না। তাই খাবারে বিশেষ কোনও বাধা নেই।’’

আরও পড়ুন
Advertisement