দর্শনা বণিক। ছবি: ফেসবুক।
সদ্য বিয়ে হয়েছে তাঁর। জীবন যে খুব বদলে গিয়েছে, একটুও মনে করছেন না দর্শনা বণিক। তাঁর কথায়, “খুব বদল হয়নি। কারণ, আমার আর সৌরভ (দাস)-এর সম্পর্ক খুব বেশি দিনের নয়। আমরা একত্রবাস করেছি এমনও নয়। ফলে, বিয়ের পরেই আমরা একে অন্যকে ভাল মতো আবিষ্কার করছি।”
বিবাহিত জীবনের এই মিষ্টি রেশ নাকি দর্শনার আগামী ছবি ‘সূর্য’ জুড়ে। ছবিমুক্তি ১৯ জুলাই। প্রদীপ চক্রবর্তীর প্রযোজনায় এই ছবিতে দর্শনা জুটি বেঁধেছেন বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সমান্তরাল ভাবে রয়েছেন মুধমিতা সরকার। ছবিমুক্তির আগে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি অভিনেত্রী। ব্যক্তিগত জীবন থেকে অভিনয়জীবন—অকপট তিনি।
‘সূর্য’ ছবিটি এর আগে একাধিক ভাষায় তৈরি হয়েছে। তামিল ভাষায় ‘মারা’, মালয়ালম ভাষায় ‘চার্লি’, মরাঠিতে ‘দেবা’। দর্শনার (দিয়া) মুখে বিক্রমের নানা কথা শুনতে শুনতে তাঁর প্রেমে পড়বেন মধুমিতা (উমা)। চিত্রনাট্যের খাতিরে একাধিক দৃশ্যে দর্শনাকে রূপটানহীন অবস্থায় দেখা যাবে। একে এতগুলো ভাষায় তৈরি ছবির বাংলা সংস্করণে অভিনয়, তার উপরে বিক্রম-মধুমিতার সঙ্গে অভিনয়। ছবিতে দর্শনাকে কতটা দেখতে পাবে দর্শক? গল্পে তাঁর গুরুত্বই বা কতটা? ছবিতে সই করার আগে এগুলো নিয়ে ভেবেছিলেন অভিনেত্রী? দর্শনার কথায়, “অবশ্যই ভেবেছি। পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিককে প্রশ্নও করেছিলাম বিষয়টি নিয়ে। পরিচালক জানিয়েছিলেন, পর্দায় যখন থাকব না, তখনও আমার রেশ থেকে যাবে। এর পর চিত্রনাট্য পড়ি। ‘দিয়া’ চরিত্রকে ভালবেসে ফেলি। ছবি জুড়ে অন্য রকম এক ভালবাসার গল্প। এর পর আর রাজি না হওয়ার কোনও কারণ ছিল না।” পাশাপাশি এ-ও আশা করছেন, বাংলায় তৈরি হওয়া ‘সূর্য’ও দর্শকদের মন ভাল করে দেবে।
ছবির মতো অন্য রকম প্রেম কি সৌরভ-দর্শনার মধ্যেও? যে ভালবাসার কথা শুরুতে দর্শনা বলছিলেন! অভিনেত্রীর দাবি, তাঁদের দাম্পত্যে বন্ধুত্ব বেশি। তাই তিনি মাসে ১০ দিন বাবার কাছে কাটাতে পারেন। বাকি সময় শ্বশুরবাড়ি। সৌরভ বোঝেন, সদ্য বাবার বাড়ি ছেড়ে আসার পরে মেয়েদের মনের অবস্থা কী হয়। একই ভাবে এখনও তাঁকে রান্নাঘরে যেতে হয়নি। বরং, বৃষ্টির দিনে সৌরভ খিচুড়ি, ভাজা রান্না করে তাঁকে খাওয়ান।
এই প্রথম বিক্রমের সঙ্গে পর্দায়। নায়কের সঙ্গে বন্ধুত্ব হল? মিষ্টি হেসে জবাব দিলেন, “ভাল, বিক্রম বেশ ভাল। পাহাড়ি অঞ্চলে শুটিং। আমি পাহাড়, উঁচু জায়গায় ভয় পাই। বিক্রম, শিলাদা (পরিচালক) সেই ভয় কাটিয়ে দিয়েছেন। শুটিংয়ের আগে আমরা দৃশ্য নিয়ে আলোচনা করে নিতাম।” এই প্রসঙ্গে একটি মজার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন তিনি। পাহাড়ে হঠাৎ বৃষ্টি নামে। সে রকমই এক দিন বৃষ্টির কারণে শুটিং বন্ধ। বিক্রম, শিলাদিত্য ঘোষণা করলেন, বাকিরা গাড়িতে হোটেলে যাক। তাঁরা বিক্রমের বাইকে চড়ে ভিজতে ভিজতে যাবেন। শুনেই লোভ হয়েছিল দর্শনার। তাঁর পাল্টা আবদার, এই মজা তিনিও নেবেন। তার পরেই চড়ে বসেন বিক্রমের বাইকে। দাবি, “ভয় ভুলে সে দিন দারুণ মজা করেছিলাম। ঝিরঝিরে বৃষ্টি। বিক্রমের বাইকে চড়ে পাহাড়ি পথে সে দিন উড়েছিলাম আমি।”
এমনই মিষ্টি স্মৃতি নিয়ে ছবিমুক্তির দিকে তাকিয়ে দর্শনা। ঝুলিতে আরও অনেক কাজ। সম্প্রতি, বাংলাদেশের একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন। দক্ষিণী ছবির পাশাপাশি ভোজপুরি ছবিতেও কাজ করলেন। মুক্তি পাবে শুভ্রজিৎ মিত্রের ‘দেবী চৌধুরাণী’। সব মিলিয়ে জীবন পরিপূর্ণ? তৃপ্তির হাসি হেসে অভিনেত্রী জানালেন, পূর্ণতার আশাতেই তিনি সৌরভকে বিয়ে করেছেন। এই প্রজন্মের হলেও একত্রবাস নয়, সাত পাকের বাঁধনেই বিশ্বাসী তিনি।