তারক সিংহ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তৃণমূলের দুর্গ দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে দ্বিতীয় বারের জন্য তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন মালা রায়। সেই ভোট পরিচালনার জন্য মঙ্গলবার নির্বাচনী কমিটি গড়েছে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল কমিটি। সেই কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তারক সিংহ। নবগঠিত এই কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন মোট ১২ জন তৃণমূল নেতা। যাঁর মধ্যে অনেকেই তারকের তুলনায় রাজনীতিতে নবীন। তাই তালিকায় নিজের নাম দেখতে না পেয়ে খানিকটা অভিমানী হয়ে পড়েছেন তারক।
অথচ, ১৯৯৮ সালে তৃণমূল গঠনের সময় যাঁরা মমতার সঙ্গে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন, তাঁদেরই এক জন তারক। বর্তমানে তিনি বেহালা পশ্চিম বিধানসভা এলাকার অন্তগর্ত ১১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদয়ের (নিকাশি) দায়িত্বও তাঁর কাঁধে। এ ছাড়াও বেহালা পূর্ব বিধানসভার অন্তর্গত ১১৬ এবং ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাঁর কন্যা কৃষ্ণা ও পুত্র অমিত। এমন এক জন প্রভাবশালী নেতার নির্বাচনী কমিটি থেকে বাদ পড়া নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূলের অন্দরে। কারণ ১২ জনের এই কমিটিতে এমন অনেকেই রয়েছে, যাঁরা রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার নিরিখে তারকের চেয়ে অনভিজ্ঞ। বাম জমানাতে দক্ষিণ কলকাতার বড় অংশের রাজনীতিতে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তারকের মতামতকেও গুরুত্ব দিতেন তৃণমূলের সর্ব্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এমন এক জন নেতার নির্বাচন কমিটিতে জায়গা না পাওয়ার বিষয়টি দলের নীচুতলার কর্মীদের বিশেষ ভাবে নজর টেনেছে।
দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস কুমার নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন। এ ছাড়াও, কমিটির সদস্য হয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, জাভেদ আহমেদ খান, বাবুল সুপ্রিয়, বেহালা পূর্বের বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত, মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, সন্দীপরঞ্জন বক্সী এবং বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন কাউন্সিলর অঞ্জন দাস, বোরো চেয়ারম্যান তথা দক্ষিণ কলকাতা জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, দক্ষিণ কলকাতা জেলা যুব সংগঠনের সভাপতি সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের কমিটিতেও জায়গা পেয়েছিলেন তারক।
তবে নির্বাচন কমিটিতে জায়গা না পাওয়া প্রসঙ্গে তারক কোনও ক্ষোভপ্রকাশ করতে চাননি। বরং অভিমানের সুরেই বলেছেন, ‘‘দল হয়তো মনে করেছে, এখন আর আমার মতো মানুষের প্রয়োজন নেই। তাই নির্বাচন কমিটিতে রাখেনি। এ বিষয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই, তবে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী মালাকে জেতাতে দল যে দায়িত্ব দেবে তা পালন করব।’’