দেব আর রুক্মিণী মৈত্র। নিজস্ব চিত্র।
রুক্মিণী মৈত্র ‘নটী বিনোদিনী’, ছবির নিবেদক, যৌথ প্রযোজক দেব। শনিবার সকালে নন্দন ৩ সভাগৃহ দুই অভিনেতার রসায়নের আরও এক বার সাক্ষী। এ দিন ছবির ঝলক মুক্তি পেল। এক ঝাঁক সাংবাদিকের সামনে অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে প্রযোজক-অভিনেতা বার্তা দিলেন, “এর আগে ছবির পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায় জাতীয় স্তরের পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু হিন্দি ছবির জন্য। এই ছবি দিয়ে বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় পা রাখলেন তিনি। আমার বিশ্বাস, ‘বিনোদিনী একটি নটীর উপাখ্যান’ তাঁকে আরও একটি জাতীয় স্তরের পুরস্কার এনে দেবে।” সঙ্গে এ-ও দাবি দেবের, ছবির নায়িকা রুক্মিণীই নাকি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী! একের পর এক বেড়া টপকে এগিয়ে যাচ্ছেন!
দেবের ‘খাদান’-এর বিশাল সাফল্যের পরেই মুক্তি পাচ্ছে রুক্মিণীর ‘বিনোদিনী’। তাঁকে ঘিরে অভিনেতাদের বলয়। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (গিরিশ ঘোষ), চান্দ্রেয়ী ঘোষ (গঙ্গাবাই) রাহুল বোস (রাঙাবাবু), মীর আফসার আলি (গুর্মুখ রায়), ওম সাহনি, রূপসা চট্টোপাধ্যায় এবং আরও অনেকে। সঙ্গিনীর সঙ্গে বাস্তবে দেবের টক-মিষ্টি-ঝাল সম্পর্ক। পর্দাতেও কি তার আঁচ পড়বে? ‘তুই বড় না মুই বড়’— এই দ্বন্দ্ব কি ফের শোরগোল ফেলবে সমাজমাধ্যম হয়ে সংবাদমাধ্যমে? চর্চা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। দেব এ দিন উদারচেতা। মন দিয়ে ‘হোমটাস্ক’ করে এসেছিলেন। নিজেই প্রসঙ্গ তুলে জবাব দিলেন, “প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে কী? শুরু হয়ে গিয়েছে। ‘বিনোদিনী’র প্রচার নাকি ‘খাদান’-এর মতো হচ্ছে না! নালিশ নায়িকার। ওর মধ্যে আমার ছায়া দেখতে পাই। একই রকম খিটখিটে, খুঁতখুঁতে।” আরও দাবি, খুব অল্প সময়ে নায়িকা ‘বিনোদিনী’ চরিত্রে অভিনয় করছেন। দেব তাই হিংসে করেন তাঁকে।
পাশে দাঁড়ানো রুক্মিণীর মুখে তৃপ্তির হাসি। এখানেই শেষ নয়। রাতে ঘুমের ঘোরে নাকি হাতে নাচের মুদ্রা ফুটিয়ে তোলেন— এ-ও জানেন দেব। বলে ফেলেই জিভ কেটেছেন। অকপটে শিকার করেছেন, “না না! ওর মা জানিয়েছেন। নইলে আমি কী করে জানব?” দেবের ‘দেবী’র মুখ লজ্জায় লাল। যুগলের রসায়ন দেখে সাংবাদিকদের মুখেও খুশির হাসি। এর পরেই ঝলকমুক্তি।
ঝলকে আরও এক বার নিজেকে দেখে আবেগে ভেসেছেন রুক্মিণী। চোখের জল সামলাতে মুখ লুকিয়েছেন দেবের কাঁধে। জানিয়েছেন, এই চরিত্র তাঁকে অভিনয়ের অন্য এক জগতে পৌঁছে দিয়েছে। যা আজীবন সঙ্গে থেকে যাবে তাঁর। দেবের কাছে তিনি ঋণী, পুরুষশাসিত বিনোদন দুনিয়ায় ‘নারীকেন্দ্রিক’ চরিত্রে অভিনয়ের সাহস জোগানোর জন্য। পরিচালক রামকমলের দাবি, “ঝলক দেখার পর সকলের স্বতঃস্ফূর্ত নীরবতা থেকে মনে হচ্ছে, আমার ‘রোগা’ বিনোদিনী সসম্মানে উত্তীর্ণ। পুরোটাই দেবের কৃতিত্ব। তিনি বলেছিলেন, আমার ছবি এই প্রজন্মের কাছে নটী বিনোদনীর জীবন যেন জীবন্ত দলিল হয়ে ওঠে। আমি চেষ্টা করেছি মাত্র।” দেবের কাছে কৃতজ্ঞ তিনিও। তাঁর মতো নতুন পরিচালককে বড় কিছু বানানোর সাহস দেওয়ার জন্য। ছবিমুক্তি ২৩ জানুয়ারি।