বেড়ানো হোক প্রযুক্তি নির্ভর। ছবি: সংগৃহীত।
সময় বদলাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে বেড়ানোর ধরনও। ব্যস্ত জীবন থেকে মুক্তি পেতে এক টুকরো খোলা আকাশ, নদী, ঝর্নার সন্ধান দরকার। কিন্তু সেই পরিকল্পনার জন্যেও সময় খরচ করার সময় কই?
অনেকেই এখন চাইছেন বেড়াতে যাবেন, গন্তব্যে পৌঁছবেন, হোটেল প্রস্তুত থাকবে, গাড়ি ঠিক করা থাকবে। কোনও ঝঞ্ঝাট, বাড়তি চিন্তা থাকবে না। ভ্রমণ হবে নিরুদ্বেগ, ঝক্কিহীন।
তবে, তার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে, এর-ওর সঙ্গে কথা বলে হোটেল, গাড়ি ঠিক করতেও অনেকে রাজি নন। তা হলে কী করলে ভ্রমণের পরিকল্পনা হবে নির্ঝঞ্ঝাট?
আধুনিক ব্যাগপত্র
ভ্রমণের সঙ্গে জুড়ে থাক গোছগাছ। আধুনিক ট্রলি, রুকস্যাকে জিনিসপত্র গুছিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থাও থাকে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে। অনেক পরিকল্পনা করেই এগুলির নকশা করা হয়, যাতে প্রয়োজনের জিনিস গোছাতে সুবিধা হয়। পাশাপাশি ট্রলি সহজে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাকা, গড়নেও নানা রকম প্রযুক্তির ব্যবহার হয়। বেড়ানো যদি বিমানে হয়, তা হলে অবশ্য রিমোটের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত ট্রলিও বেছে নিতে পারেন। এগুলি হাতে ধরে টানতে হয় না। রিমোটের বোতামে চাপ দিলেই নিজে থেকেই এগিয়ে যায়। এই ধরনের প্রযুক্তি নির্ভর লাগেজ থাকলে, ভ্রমণ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। ইদানীং জিপিএস ট্র্যাকারযুক্ত ট্রলি, ব্যাগ পাওয়া যায়। এই ধরনের জিনিসের ব্যবহারে লাগেজ হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও অনেকটাই কমে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যহার
এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে। মুখের কথা খসাতে যেটুকু সময় লাগে। কোথায় যেতে চান, তার পরিকল্পনা কী ভাবে করবেন, দু’কথায় জানতে চাইলেই গড়গড়িয়ে টিপ্স দেবে মেটা বা গুগলের জেমিনি এআই-সহ যে কোনও কৃত্রিম মেধার টুল। হোটেল বুকিং থেকে গাড়ি, সবটাই কোন অ্যাপ দিয়ে করা যাবে, সেই সমস্ত লিঙ্ক হাতের কাছে হাজির করবে। ফলে বেড়ানোর পরিকল্পনাও এখন অনেক সহজ। এ ছাড়া ভ্রমণের দিনক্ষণ, পরিকল্পনার জন্য রকমারি অ্যাপও রয়েছে। হোটেল বুকিং থেকে গাড়িও মুঠোফোনের এক ক্লিকেই সম্ভব। সাহায্যে নেওয়া যেতে পারে তেমনই কোনও অ্যাপের।
ইনসিয়োরেন্স
বিদেশ বিভুঁইয়ে যান বা দেশের মধ্যে কোথাও, ভ্রমণের জন্য বিমা করিয়ে রাখলেও সুবিধা মিলবে। অনেক সময় ট্রেনে, বিমানে ব্যাগপত্র হারিয়ে যায়। দামি জিনিস থাকলে সে সবের জন্য কিছুটা হলেও খরচ মিলবে ইনসিয়োরেন্সে। ট্রেন বা বিমানের দেরি, চিকিৎসাজনিত কারণ, যাত্রাপথে বিঘ্ন-সহ নানা কারণে ইদানীং ভ্রমণ সংক্রান্ত বিমা ক্রমশই জনপ্রিয় হচ্ছে।
ডিজি যাত্রা
উড়ানে যাতায়াত করতে হলে ডিজি যাত্রার সুবিধা নিতে পারেন। মোবাইলে অ্যাপটি ডাউনলোড করে আধারকার্ড, মুখের ছবি দিয়ে ডিজি যাত্রা লকার বানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আর বিমানবন্দরে আইডি কার্ড দেখিয়ে ভিতরে যাওয়ার জন্য বা ব্যাগ পরীক্ষার সময় লম্বা লাইন দিতে হবে না। যে বিমান বন্দরে ডিজি যাত্রা পরিষেবার সুযোগ রয়েছে সেখানে গিয়ে বোর্ডিং পাস এবং চোখের মণি স্ক্যান করলে টিকিট, পরিচয়পত্র দেখানোর প্রয়োজন পড়বে না।
ইন্টারনেট সংযোগ
গোটা দুনিয়ায় যুক্ত অন্তর্জালে। দু'মিনিট সেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে মানুষজন দিশাহীন হয়ে পড়েন, বিশেষত বেড়াতে গিয়ে। বিদেশযাত্রার পরিকল্পনা থাকলে বিশ্বজুড়েই কাজে আসবে এমন সিম, ওয়াফাই হটস্পট পরিষেবা বেছে নিতে পারেন। বিশেষত একাধিক দেশে ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকলে, এটি সুবিধাজনক।