ভোটকর্মীরা আর শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচনী ডিউটি এড়িয়ে যেতে পারবেন না। —ফাইল চিত্র।
ভোটের ডিউটি এড়িয়ে যেতে চান অনেক সরকারি কর্মচারিই। বহু ক্ষেত্রে শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে তাঁরা নির্বাচনের কাজ থেকে বিরত থাকতে চান। কিন্তু সেই অজুহাত দেখিয়ে যাতে আর সরকারি কর্মচারীরা আর ভোট সংক্রান্ত কাজ এড়িয়ে না যেতে পারেন, সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করল রাজ্য প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে একটি মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে যাঁরা ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি চাইবেন, তাঁদের ওই মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে শারীরিক পরীক্ষা দিতে হবে। সেই পরীক্ষার পরেই প্রশাসন ঠিক করবে আবেদনকারী সরকারি কর্মীকে ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে কি না।
১৯ এপ্রিল রাজ্যে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ হবে। ভোট হবে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে। তাই মঙ্গলবার জেলাশাসকদের দফতর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ম্যানপাওয়ার অ্যান্ড পোলিং পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সেল’ জেলার একটি নির্দিষ্ট হাসপাতালে ভোটের সময় অসুস্থতার কারণে ছুটির আবেদনকারী সরকারি কর্মচারীদের মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে শারীরিক পরীক্ষা দিতে হবে। বুধবার থেকেই ওই তিন লোকসভা এলাকায় মনোনয়ন দাখিলের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই ২০-২২ মার্চের মধ্যে আবেদনকারী সরকারি কর্মচারীদের সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে গিয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে হাজির হয়ে শারীরিক পরীক্ষা দিয়ে আসতে হবে। ধাপে ধাপে যে সব জেলায় ভোট হবে, সেখানেও সরকারি হাসপাতালে এই ধরনের মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে ছুটির আবেদনকারী সরকারি কর্মচারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে।
এ প্রসঙ্গে, ভোটকর্মী ঐক্য মঞ্চ রাজ্য সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘অসুস্থতার দোহাই দিয়ে যাঁরা ভোটের ডিউটি থেকে ছাড় পেতে চাইছেন, তাঁদের মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে যেতে অসুবিধা থাকার কথা নয়। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় নতুন শিক্ষা নীতিতে শিক্ষকদের শিক্ষা-বহির্ভূত কাজে ব্যবহার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেটা কি জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভুলে গিয়েছে? কেন্দ্রের নিয়মকে মান্যতা দিচ্ছে না।’’ প্রসঙ্গত, সরকারি শিক্ষকদেরও ভোটের কাজে ব্যবহার করা হয়। তবে রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ভোটের সময় নির্বাচনী ডিউটিতে না যোগদানের ক্ষেত্রে অসুস্থতার অজুহাতটিকেই সরকারি কর্মচারীরা সর্বাধিক ব্যবহার করে থাকেন। তাই বিগত নির্বাচনগুলি থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে আবেদনকারীদের শারীরিক পরীক্ষা দিয়ে আবেদনের সত্যতা যাচাই করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। এর ফলে ভোটকর্মীরা আর শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে আর নির্বাচনী ডিউটি এড়িয়ে যেতে পারবেন না।