(বাঁ দিকে) ইউসুফ পাঠান। হুমায়ুন কবীর (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
গত ১০ মার্চ ব্রিগেডের ‘জনগর্জন সভা’ থেকে ৪২টি কেন্দ্রে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বহরমপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের নাম নিয়ে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তার পর থেকে তিনি ধারাবাহিক ভাবে বলে গিয়েছেন, বহরমপুরে তিনি পাঠানকে মানবেন না। বুধবার বিকেলে পাঠান কলকাতায় আসছেন। বৃহস্পতিবার তাঁর প্রচার শুরু বহরমপুরে। তবে এর মধ্যে হুমায়ুনের বিদ্রোহ, অভিমান, রাগ— সব গলে জল হয়ে গিয়েছে। বুধবার দুপুরে আনন্দবাজার অনলাইনকে হুয়ায়ুন জানিয়ে দিলেন, তিনি পাঠানের হয়ে প্রচারে নামবেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি ২০২১ সালে ভরতপুরে যত ভোটে জিতেছিলেন, তার চেয়ে বেশি ভোটে পাঠানকে লিড দেওয়াবেন বলেও অঙ্গীকার করেছেন বলে দাবি করলেন।
হুমায়ুন বলেন, ‘‘আমি আত্মসম্মান নিয়ে থাকি। ব্রিগেডের সভা থেকে বহরমপুরের প্রার্থীর নাম ওই ভাবে ঘোষণা হওয়ায় আমার খারাপ লেগেছিল। নেতৃত্ব যদি আমাদের এক বার ডেকে বলে দিতেন, তা হলে এমন হয়তো বলতাম না।’’ ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক আরও বলেন, ‘‘দল কাকে কোথায় প্রার্থী করবে সেটা সম্পূর্ণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয়। সেখানে আমার কথা বলার এক্তিয়ার নেই। কিন্তু ব্রিগেডের আগে যদি আমাদের ডেকে নেতৃত্ব বলে দিতেন যে অমুককে প্রার্থী করছি, তা হলে খারাপ লাগাটা তৈরি হত না।’’
গত ১৭ মার্চ মুর্শিদাবাদের নেতৃত্বকে নিয়ে নির্বাচনী সভা করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেই বৈঠকে হুমায়ুন যাননি। রাতে বহরমপুরে ফিরহাদ একটি হোটেলে হুমায়ুনের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। কিন্তু তার পরেও পাঠানকে হারানোর বিষয়ে অনড় অবস্থান দেখিয়েছিলেন হুয়ায়ুন। কৌতূহল হল, হুমায়ুনের বিদ্রোহ গলে জল হল কী ভাবে?
ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়কের দাবি, মঙ্গলবার অভিষেক তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। হুমায়ুনের কথায়, ‘‘মঙ্গলবার ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় ডেকেছিলেন। তিনি আমায় বুঝিয়েছেন, দলের প্রার্থীর হয়ে নামতে হবে। খুবই সম্মান দিয়ে নামতে হবে। তার পরেই আমি ঠিক করেছি, পাঠানকে জেতাতে ময়দানে নামব।’’ বুধবার কলকাতায় পা রাখার পর বৃহস্পতিবার সকালে সড়কপথে পাঠানের বহরমপুরে যাওয়ার কথা। হুমায়ুন বলেন, ‘‘আমি কলকাতায় আছি। আমিও কাল গাড়িতেই বহরমপুরে যাব। তার পর নেমে পড়ব।’’ অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের পর ‘প্রত্যয়ী’ হুমায়ুন এ-ও বলেন, ‘‘ভরতপুরে আমি জিতেছিলাম ৪৩ হাজার ৩৮৩ ভোটে। পাঠানকে তার থেকে বেশি লিড দেব।’’