প্রতীকী ছবি।
প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি কর্মমুখী করতে উদ্যোগী হল কলকাতার নব বালিগঞ্জ মহাবিদ্যালয়। মার্চ মাস থেকে চালু হচ্ছে ১৮০ ঘণ্টার স্বল্পমেয়াদী পাঠক্রম।
নব বালিগঞ্জ মহাবিদ্যালয় কলকাতার বুকে কসবায় অবস্থিত হলেও এই মহাবিদ্যালয়ের বেশির ভাগ পড়ুয়াই পড়তে আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে, যাদের অধিকাংশই প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী।
আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা এই সমস্ত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি স্বনির্ভর করা বড় চ্যালেঞ্জ কলেজের কাছে। পাশাপাশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হওয়ার পর প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে সেই উদ্দেশ্যই চালু করতে চলেছেন ‘সার্টিফিকেট ইন হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস’ নামক পাঠক্রম।
আইকিউএসসি কো-অর্ডিনেটর তমালতরু রায় বলেন, “বর্তমানে সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে চাকরি। সাধারণ ও আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষিত হওয়ার পর চাকরি পাওয়া। এই সার্টিফিকেট কোর্স সেই সুযোগ করে দেবে বলে আমরা আশাবাদী।”
জানুয়ারি মাসে নব বালিগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ের সঙ্গে ভারত সেবাশ্রম সংঘের অন্তর্গত প্রণবানন্দ ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট-এর সঙ্গে মউ স্বাক্ষর হয়। সেখানে ১৮০ ঘণ্টায় স্বল্পমেয়াদী ‘হেলথ কেয়ার সার্টিফিকেট পাঠক্রম’ যৌথ ভাবে পড়ানো হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই পাঠক্রমের থিওরিটিক্যাল ক্লাস হবে অফলাইন এবং অনলাইন মোডে। আর প্র্যাকটিক্যাল প্রশিক্ষণ দেবে ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট। ১৮০ ঘণ্টার এই পাঠক্রমে আসন সংখ্যা ৩০। মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এই পাঠক্রমের ক্লাস শুরু হবে বলে জানাচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
দু’টি বিভাগে পাঠক্রমকে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমটি হল হিউম্যান সায়েন্স ও বিহেভিয়ার সময়সীমা হচ্ছে ৭০ ঘন্টা। এখানে থাকছে, অ্যানাটমি, সাইকোলজি, ফিজিওলজি, কেমিক্যাল ফিজিওলজির পাশাপাশি ডায়েট ও নিউট্রিশন শেখানো হবে।
অপরটি হল ‘যোগা অ্যান্ড ওয়েলনেস’ পাঠক্রম ১১০ ঘণ্টার। এর মধ্যে রয়েছে যোগা থেরাপি, ব্যায়াম থেরাপি, ফিটনেস থেরাপি ও প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ।
এ ছাড়াও এই পাঠক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে স্কিল ও কমিউনিকেশন পাঠক্রমও।
অধ্যক্ষা অয়ন্তিকা ঘোষ বলেন, “এই ধরনের পাঠক্রমের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পড়ুয়ারা বিভিন্ন হেলথ সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন । পাশাপাশি প্রত্যন্ত এলাকা গুলিতে মানুষের জন্য নিজেরাও সার্ভিস দিতে পারবেন। প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট কোর্স এর সুযোগ করে দিলেও পরবর্তীকালে ইচ্ছুক পড়ুয়ারা ডিপ্লোমাও করতে পারবেন।”
বর্তমানে নব বালিগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৯০০ মতো। এ বছর স্নাতকস্তরে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে ৫২৫ মতো। যেখানে প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭০ শতাংশ বলে জানাচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের প্রশিক্ষণ নয় ইন্টার্নশিপেরও ব্যবস্থা থাকছে এই সার্টিফিকেট কোর্সে। আর তারপর কর্মসংস্থানের সুযোগ তো থাকছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।