দেবী দশভুজা। অসুর সংহারে তিনি নিয়েছেন নানা রূপ। কখনও তিনি তো আবার কালী, কখনও তিনি জগদ্ধাত্রী। তবে শুধু দেবী নয়, দেবীর বাহন সিংহের রূপেও দেখা যায় নানা বৈচিত্র্য। রজোগুণের অধিকারী সে, পরম বিক্রমের প্রতীক। তাই গিরিরাজ হিমালয় যুদ্ধে যাওয়ার আগে মাকে বাহন রূপে দান করেন সিংহকে। কিন্তু কোথাও কোথাও এই সিংহের মুখ আবার ঘোড়ার মতো দেখতে। শরীর সিংহের ন্যায় হলেও মুখ ঘোড়ার। কলকাতার মিত্র বাড়িতে যে দুর্গা পুজো হয়, সেখানে দুর্গার বাহন ঘোড়ার মতো দেখতে।
তবে সিংহের এই নানা রূপের পিছনে রয়েছে নানা কাহিনি। শোনা যায়, এই ঘোটকমুখী সিংহের পুজোর প্রচলন করেন নদিয়ার রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র। অষ্টাদশ শতাব্দীতে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দুর্গা পুজোয় শুরু করেন নতুন রীতির। সেই রীতি মেনে মহালয়ার দিন থেকে রাজ্যের মঙ্গল কামনায় শুরু হত যজ্ঞের। সেই যজ্ঞ চলত টানা নবমী পর্যন্ত। এই সময় অবধি নিভত না যজ্ঞের আগুন। দেবীকে এখানে পুজো করা হত রাজরাজেশ্বরী শক্তির প্রতীক রূপে। দেবীর সাজেও তাই যোদ্ধার বেশ। সেই কারণেই দেবীর বাহন এখানে ঘোটক মুখের। আজও সেখানে দেবীর বাহনের মুখ ঘোড়ার মতোই। যোদ্ধা বেশেই পূজিত হন দেবী।
আবার মতান্তরে শোনা যায়, অন্য কাহিনি। ১৮২৫ সালে চুঁচুড়ার প্রাণকৃষ্ণ হালদার নিজের বাড়িতে দুর্গা পুজো শুরু করেন। ১৮২৬ সালে শুরু হয় বারোয়ারি পুজোর। তবে গোল বাধে অন্য জায়গায়। কোন মতে পুজো হবে তা নিয়ে শুরু হয় বিরোধ। শাক্ত এবং বৈষ্ণবদের মধ্যে বাধে ঝামেলা। শেষে শাস্ত্রজ্ঞরা বিধান দেন, একই মূর্তিকে দু’বার দুই মতে পুজো করার। এখানেই শেষ নয়। বিসর্জনের সময় বেঁকে বসে বৈষ্ণবরা। তারা বলে, ঘট বিসর্জন হয়ে গিয়েছে তাই প্রতিমা বিসর্জনের টাকা তারা দেবে না। বিরোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে পরের বছর থেকেই আলাদা হয়ে যায় পুজো। শাক্তদের প্রতিমায় সিংহ ছিল সাধারণ সিংহের মতোই। আর বৈষ্ণবদের মূর্তিতে সিংহের মুখ হয় ঘোড়ার মতো।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy