মা দুর্গার কথা হলেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে এক চিন্ময়ী রূপ। আবার প্রয়োজনে তিনিই হয়ে ওঠেন অসুর সংহারিণী রণংদেহী। তাঁর দশ হাতে দশ অস্ত্র। তিনি সিংহবাহিনী। গৌরবর্ণ রূপ তাঁর। তিনি শান্ত মাতৃসমা। আবার দেবী দুর্গার ঠিক উল্টো রূপ দেবী কালীর। তিনি শ্যাম বর্ণা, গলায় তাঁর মুণ্ড মালা। কিন্তু কখনও শুনেছেন মা দুর্গার গায়ের রং কালো? ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য বাড়িতে মায়ের রং কালো। তবে মায়ের গায়ের রং কিন্তু কালো নয়, কালো শুধু মুখ। মায়ের ইচ্ছাতেই নাকি তাঁর এমন রূপে পুজো হয় এখানে।
তবে ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য বাড়ির পুজোর শুরু এখানে নয়। এই পুজোর জন্মভূমি বাংলাদেশের ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের পাইনখাড়া গ্রামে। প্রায় ৪৩৮ বছরের এই পুজো ঘিরে রয়েছে নানা রকম অদ্ভুত নিয়ম। পুজো শুরুর প্রথমে মা পূজিত হতেন গৌর বর্ণা রূপেই। তবে মায়ের এই বিশেষ রূপের পুজো শুরু ২২০ বছর আগে।
এই পুজো ঘিরে রয়েছে এক ইতিহাস। কথিত আছে, দুর্গা মণ্ডপের পাশেই ছিল মা মনসা মন্দির। ঠাকুরমশাই আগে মনসা পুজো করে তারপর করতেন দুর্গা পুজো। একদিন মনসা পুজো করে তিনি যাচ্ছিলেন দুর্গা পুজো করতে। হঠাৎ একটি কাক মনসা মন্দির থেকে জ্বলন্ত প্রদীপের সলতে নিয়ে উড়ে যায়। আর সেই সলতে গিয়ে পড়ে দুর্গা মন্দিরের শণের চালের উপর। জ্বলে যায় সমগ্র মন্দির এবং মায়ের মূর্তি। এই ঘটনার পর পুজো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বাড়ির লোকজন। কিন্তু এই সময়ে বাড়ির গৃহ কর্তা রামাকান্ত ভট্টাচার্য স্বপ্নাদেশ পান। তাঁরে বলা হয়, কোনও ভাবেই পুজো বন্ধ করা যাবে না। এই রূপেই মা পূজিত হতে চান।
শুধু মায়ের মুখের রং যে কালো, তাই নয়। দেবীর গায়ের রং তামাটে। এখানে দেবীর বাঁ দিকে গণেশের সঙ্গে থাকে স্বরসতী আর দেবীর ডান দিকে কার্তিকের সঙ্গে থাকে লক্ষী। নবপত্রিকাও থাকে দেবীর ডান দিকে কার্তিকের পাশে। বলি দেওয়া হয় চামকুমড়ো। আবার নবমীর চালের গুড়ো দিয়ে মানুষের মূর্তি বানিয়ে প্রতিকী শত্রুর বলি দেওয়ার রীতি আছে। পুরনো নিয়ম অনুসারে বিসর্জন হয় দশমীতে।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy