বেহালার রায় বাড়ি
৩০০ বছরের পুরনো দুর্গাপুজো বেহালা রায়বাড়ির অমরেন্দ্র ভবনে হয়ে চলেছে। রায়বাহাদুর অম্বিকাচরণ রায় এই বাড়ির দুর্গাপুজো প্রথম প্রচলন করেন। পরবর্তীতে তাঁর পুত্র স্বর্গীয় অমরেন্দ্রনাথ রায় এবং তাঁর পুত্র স্বর্গীয় শৈলেন্দ্রনাথ রায় এই পুজোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বংশ পরম্পরায় বর্তমানে শৈলেন্দ্রনাথ রায়ের দুই পুত্র শ্রী সুবীর রায় ও গৌতম রায় এই দুর্গাপুজোর দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
সম্প্রতি ২৪ সেপ্টেম্বর অমৃত ভবনের দুর্গাপুজোকে অন্যতম রাজবাড়ির দুর্গাপুজো হিসেবে ইউনেস্কো থেকে সম্মানিত করা হয়েছে।
রায়বাড়ির রীতি অনুযায়ী জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজো দিয়ে নারায়ণ পুজোর মধ্য দিয়ে দুর্গাপুজোর শুভ সূচনা হয়। এরপর শুরু হয় মায়ের মূর্তি গড়ার কাজ। মৃৎশিল্পী প্রদীপ পাল ও তার পিতার নিপুন চিত্রকলায় মা সেজে উঠতেন, বর্তমানে প্রদীপ পালের কন্যা শ্রীমতি মিনাকসি পাল মূর্তি গড়ার দায়িত্বে আছেন।
এই বাড়ির পুজোয় এক বিশেষ স্মৃতি হল মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদ থেকে নারায়ন পুজো ও চণ্ডীপাঠ ষষ্ঠীর দিন সকাল পর্যন্ত হয়ে থাকে। ষষ্ঠীর দিন অধিবাস ও বিল্লো বরণ এর মাধ্যমে পুজোর সূচনা হয়। সপ্তমীর সকালের নবপত্রিকা স্নান এর ক্ষেত্রেও এই বাড়ির বিশেষ রীতি প্রচলিত রয়েছে। নবপত্রিকা স্নান এর জন্য কোন নদী বা জলাশয় নিয়ে যাওয়া হয় না বরং কাছের নদীর জল দিয়ে নবপত্রিকা স্নান করানো হয়ে থাকে। সন্ধিপুজোতে ২৮টি ডাব দিয়ে দিয়ে পুজো করা হয়।
রায়বাড়ির মায়ের ভোগ এর ক্ষেত্র বৈচিত্র দেখা যায়। নিরামিষ খিচুড়ি ও অন্ন ভোগ এর সঙ্গে মাছ দিয়েও মাকে ভোগ নিবেদন করা হয়।
দশমীতে মাকে প্রদক্ষিণ করেন বাড়ির সকল সদস্য মিলে। এরপর বেরা অঞ্জলি দেওয়া হয়। দশমীর বিকেলে থেকে শুরু হয় মায়ের বরণ। এবং এই বাড়ির ভিতরে থাকা পুকুরে মায়ের বিসর্জন দেওয়া হয়। মায়ের মূর্তি বিসর্জন দশমীতে হলেও ঘট তিন দিন পরে বিসর্জন দেওয়া হয়।
বিসর্জনের পরে ঠাকুরদালানে বাড়ির সকল সদস্য সমবেত হন এবং ১২ জন ব্রাহ্মণ মন্ত্র উচ্চারণ করে নারায়ণের আরাধনা করেন। মায়ের পুজোর ঘটের ডাবটি বাড়ির সবথেকে বড় সদস্যের হাতে তুলে দেন এবং সেটি হস্তান্তরিত হতে হতে কনিষ্ঠের হাতে আসে এটাই এই বাড়ির রীতি। বিসর্জনের পরে সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy