Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Adi Chitteshwari Durga Temple

খাস কলকাতার বুকে নরবলি! ডাকাতে দুর্গা মায়ের সেই পুজো আজও হয় বীজ মন্ত্র মেনে

খাস কলকাতাতেই কিন্তু আছে এমন এক জায়গা যেখানে মা পূজিত হন ডাকাতে দুর্গা রূপে। সাধারণ মন্ত্র নয় মায়ের পুজোয় উচ্চারিত হয় বিশেষ বীজ মন্ত্র।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৩৯
Share: Save:

তিনি দশভূজা, এক দিকে করেন পাপের সংহার আবার আরেক দিকে তিনি দয়াময়ী মা। তাঁর আরাধনায় মেতে ওঠে সারা পশ্চিমবঙ্গবাসী। চিন্ময়ীরূপে মা পূজিতা সর্বত্র। তবে খাস কলকাতাতেই কিন্তু আছে এমন এক জায়গা, যেখানে মা পূজিত হন ‘ডাকাতে দুর্গা’ রূপে। সাধারণ মন্ত্র নয়, মায়ের পুজোয় উচ্চারিত হয় বিশেষ বীজ মন্ত্র।

ইতিহাস বলছে সালটি ১৬১০ জমিদার মনোহর ঘোষ প্রতিষ্ঠা করেন এই মন্দিরের। কলকাতার কাশীপুরের কাছেই অবস্থিত এই মন্দির। গঙ্গার কাছের এই মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা কাহিনি। এখানে প্রতিষ্ঠিত মা দুর্গা ‘ডাকাতে দুর্গা’ নামেও পরিচিত।

ইতিহাস বলছে তখন বাংলায় নবাবের অস্তিত্ব পুরোপুরি মুছে যায়নি। কাশীপুর রাজবাড়ি সংলগ্ন অঞ্চল চিতপুর। ঘন সবুজ জঙ্গলে ঢাকা। দিনের বেলাতেও আলো ঢুকত না জঙ্গলের ভিতরে। আর এই অঞ্চলেই ছিল কুখ্যাত চিতে ডাকাতের রাজত্ব। যাকে ভয় পেত খোদ নবাবের বাহিনীও। ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে মা দশভূজার আরাধনা করতেন চিতে ডাকাত।

মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত মূর্তিও নির্মাণ করেন তিনি, তাঁর নিজের হাতে। কথিত আছে, একবার এক নিম কাঠ ভেসে আসে গঙ্গা বক্ষে। সেই নিম কাঠ দিয়েই চিতে ডাকাত নিজের হাতে তৈরি করেন এই মূর্তির। ডাকাতে মা দেখতেও বেশ আলাদা। মায়ের গায়ের রং যেন শিলে বাটা তাজা হলুদের মতো। অসুরের রং সবুজ। মায়ের বাহন সাদা সিংহ মনে করায় চিতে ডাকাতের কথা। শুধু সিংহ নয়, পুজিত হন দক্ষিণ রায়ও। জঙ্গলের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত মন্দিরকে এবং নিজেদের হিংস প্রাণীর হাত থেকে বাঁচাতে বাঘের দেবতা দক্ষিণ রায় পুজা পান এই মন্দিরে।

চিতে ডাকাতের মৃত্যুর পর নাকি বেশ অনেকদিন বন্ধ ছিল এখানকার পুজা। অনেক বছর পর তন্ত্র সাধনা করতে গিয়ে মায়ের মূর্তি খুঁজে পান এক ব্রহ্মচারী। তিনি আবার নতুন করে শুরু করেন মায়ের আরাধনা। সালটা ১৫৮৬। এই ব্রহ্মচারীর অষ্টম শিষ্য শ্যামসুন্দর ব্রহ্মচারী বিয়ে করেন। বার তাঁর মেয়ে ক্ষেত্রমণির বিয়ে হয় হালিশহরের রায়চৌধুরি পরিবারে। তবে থেকে আজ অবধি এই মন্দিরের নিত্য পুজার দায়িত্ব এই পরিবারের হাতে। কথিত আছে, এক সময় মায়ের পুজোয় দেওয়া হত নরবলি। আজ নরবলি না হলেও বলি প্রথা এখনও বন্ধ হয়নি। বলি দেওয়া হয় চালকুমড়ো আর বাতাবি লেবু। সপ্তমীতে সাত রকম, অষ্টমীতে আট রকম এবং নবমীতে নয় রকম ভাজা দেওয়া হয় মায়ের ভোগে। এ ছাড়াও সারা বছরে মাঝে মাঝেই মায়ের ভোগে থাকে মাছ। কোলাহলের পুজো থেকে দূরে মায়ের রূপ তাই আজও এক অদ্ভুত অনুভূতি এনে দেয় দর্শনার্থীর মনে। যেখানে ভয়ের সঙ্গে মিলে থাকে সম্ব্রম ও ভক্তি।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Chitteshwari Durga Temples
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy