বিরিয়ানির নাম শুনলেই বাঙালির জিভে জল! তবু খাদ্যরসিক বাঙালিরা অনেকেই কিন্তু এখনও ব্যাম্বু বিরিয়ানি খেয়ে উঠতে পারেননি!

ইদানীং বেহালা, তপসিয়া, বালিগঞ্জ, দমদম বিমানবন্দরের কাছে কিছু রেস্তরাঁয় পাওয়া যাচ্ছে ব্যাম্বু বিরিয়ানি। তবে বছর কয়েক আগেও কলকাতা জানত না এ হেন বিরিয়ানির হদিস। বস্তুত, এই বিরিয়ানি দক্ষিণ ভারতীয় আদিবাসীদের বহু যুগব্যাপী প্রিয় খাদ্য। এখনও কর্নাটক-তামিলনাড়ু হাইওয়ের উপরে কিংবা ভাইজ্যাগ থেকে আরাকু ভ্যালি যেতে অনেক জায়গায় দেখা যায়, রাস্তার ধারে কাঠকয়লার আঁচে মুখ বন্ধ বাঁশের খোলার ভিতরে বিরিয়ানি রান্না হচ্ছে। এটিই ব্যাম্বু বিরিয়ানি। কাঠকয়লার আঁচে বাঁশের ভিতরে রান্না হওয়ার দরুণ এর সুবাসই আলাদা।

এ হেন ব্যাম্বু বিরিয়ানি খাওয়ার সুযোগ হয়নি এখনও? এই পুজোয় রেঁধে ফেলুন বাড়িতেই। রইল রেসিপি।

উপকরণ

(৪ জনের জন্য)

বাসমতি চাল - চায়ের কাপের ৪ কাপ

টুকরো চিকেন - লেগ পিস ৪টে

পেঁয়াজ কুঁচি - চায়ের চামচের ৪ চামচ

আদা বাটা - চায়ের চামচের ১ চামচ

কাঁচা লঙ্কা বাটা - চায়ের চামচের ১ চামচ

টক দই - চায়ের চামচের ২ চামচ

বিরিয়ানি মশলা - ১ প্যাকেট

গোটা গরম মশলা - পরিমাপ মতো

জাফরান - ১টা

ঘি - চায়ের চামচের ৪ চামচ

সাদা তেল - চায়ের চামচের ৩ চামচ

স্বাদ নুন - স্বাদ মতো

ধনেপাতা কুঁচি - চায়ের চামচের ১ চামচ

পুদিনা পাতা - চায়ের চামচের ১ চামচ

ফাঁপা সবুজ বাঁশ - ১টা বা ২টো

শালপাতা - ১টা বা ২টো

আটা - পরিমাপ মতো

দুধ - চায়ের কাপের ১ কাপ

পাতিলেবুর রস - চায়ের চামচের ১ চামচ

রান্নার পদ্ধতি

১. চাল ধুয়ে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন।

২. হালকা ভেজে নেওয়া পেঁয়াজ কুচি, রসুন-আদা বাটার পেস্ট তৈরি করুন।

৩. পেঁয়াজ-রসুন-আদার পেস্টে আগে থেকে ভালো করে ধুয়ে রাখা মুরগির মাংস বিরিয়ানি মশলা, টক্ দই দিয়ে ম্যারিনেট করে রেখে দিন।

৪. ভেজানো চালের ২০ শতাংশ নিয়ে সাদা ভাত রান্না করুন।

৫. এর পরে একটা হাঁড়িতে পরিমাপ মতো জল ঢেলে তাতে গোটা গরম মশলা, সাদা তেল, পরিমাণ মতো নুন দিয়ে হাল্কা ফোটান। এবং ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন।

৬. ভিজিয়ে রাখা বাকি চালে পাতিলেবুর রস দিয়ে অল্প সেদ্ধ করে জল ঝরিয়ে রাখুন।

৭. পাশের ওভেনে কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে তেজপাতা ফোড়ন দিন। তাতে ম্যারিনেট করা মুরগির মাংস দিয়ে কষান। তবে বেশি ক্ষণ রাঁধবেন না।

৮. এ বার ফাঁপা সবুজ বাঁশের খোলের ভিতরে ঘি মাখান। তার মধ্যে একে-একে রান্না করা মাংস ও অর্ধেক রান্না করা ভাত ঢেলে দিন।

৯. তার উপরে ভেজানো জাফরান, ধনেপাতা ও পুদিনা পাতা কুচি, অল্প দুধ দিয়ে 'লেয়ার' করে দিন। খেয়াল রাখবেন কাঁচা বাঁশের উপরের দিকে যেন ১ ইঞ্চি জায়গা খালি থাকে।

১০. বাঁশের খোলের মুখটা শালপাতা ও আটামাখা দিয়ে বন্ধ করুন। কাঁচা বাঁশ হলে বেশি ভাল। শুকনো বাঁশ তাড়াতাড়ি পুড়ে যায়।

১১. বাঁশটাকে এ বার কাঠকয়লার হাল্কা আঁচে ৪০-৪৫ মিনিট ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে, উল্টেপাল্টে পোড়ান। খেয়াল রাখুন যাতে বাঁশের ভিতরের 'জুস' বাইরে বেরিয়ে না আসে।

১২. মিনিট পঁয়তাল্লিশ বাদে শালপাতা ও আটা মাখা দিয়ে বন্ধ করা বাঁশের মুখটা খুলে ফেলুন।

ব্যাম্বু বিরিয়ানি রেডি। চামচ দিয়ে বাঁশের খোলের ভিতর থেকে গরম গরম বিরিয়ানি বার করে পরিবেশন করুন।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।