Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Rudranil Ghosh Horror Story

হুশ করে মুখের সামনে চলে এল! ভূতচতুর্দশীর আগে গা শিরশিরে ঘটনা নিয়ে লিখলেন রুদ্রনীল

সে দিন ছিল পূর্ণিমার রাত। প্রায় আড়াইটে-তিনটে নাগাদ হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। জানলা দিয়ে দেখি আমার ছাদের সঙ্গে লাগোয়া ছাদ দিয়ে কেউ যেন সরে গেল। খানিকক্ষণ দেখা-না দেখার মতো করে আবার যখন তাকালাম, দেখি সাদা কাপড় পরিহিতা এক বয়স্ক মহিলা যেন দাঁড়িয়ে।

অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ

অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ

রুদ্রনীল ঘোষ
রুদ্রনীল ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫৩
Share: Save:

তখন আমার চোদ্দো বছর বয়স। সে দিন তিনতলা বাড়ির দোতলায় মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে ঘুমোচ্ছিলাম কোনও এক লোডশেডিংয়ের রাতে। প্রায় দরজার মতো আকারের জানলা ছিল আমার মামারবাড়িতে। ঠিক পাশের বাড়িটা ছিল একদম ফাঁকা। কেউ থাকত না। কিন্তু তার জানলাগুলো খোলা থাকত সব সময়ে। সুতির মশারির ভিতরে আমরা দুই ভাই ঘুমোতাম। জানলা দিয়ে এত হাওয়া আসত যে, ঘরের পাখাও হার মানত।

সে দিন ছিল পূর্ণিমার রাত। প্রায় আড়াইটে-তিনটে নাগাদ হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। জানলা দিয়ে দেখি আমার ছাদের সঙ্গে লাগোয়া ছাদ দিয়ে কেউ যেন সরে গেল। খানিকক্ষণ দেখা-না দেখার মতো করে আবার যখন তাকালাম, দেখি সাদা কাপড় পরিহিতা এক বয়স্ক মহিলা যেন দাঁড়িয়ে। তাঁর কাপড় উড়ছে হাওয়ায়। আমার থেকে মাত্র ৩০-৪০ ফুট দূরত্বে দাঁড়িয়ে পাশের বাড়ির ছাদে। আমার মামাতো ভাইকে ডাকব কি ডাকব না ভেবে ইতস্তত করছিলাম। এ দিকে যত বার চোখ বন্ধ করে আবার খুলে তাকানোর চেষ্টা করছি, সেই অবয়ব বারবার আমার জানলা থেকে দূরত্ব বদলাচ্ছে। প্রথমে ভেবেছিলাম তারে বোধহয় কারও কাপড় মেলা রয়েছে। আমাদের পাশের বাড়িতে হয়তো কেউ না কেউ থাকে। এবং তারই হয়তো কাপড় হাওয়ায় উড়ছে। কিছুক্ষণ পরে দেখি সে অবয়ব একদম আমার জানালার কাছে। হাড় হিম হয়ে এল। ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলাম।

ঘুম ভাঙল পরদিন সকালে। আমার মামাতো ভাই আমার আগেই ওঠে। পরিপাটি বিছানার একপাশে আমি জড়োসড়ো হয়ে ঘুমোচ্ছিলাম। মামী এসে চা খাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করতে আমি প্রথমে কিছু বলতে পারিনি। ভাবছিলাম পুরো রাত জুড়েই হয়তো স্বপ্ন দেখেছি। আমার ভাই তখন বেরিয়েছিল কাছেপিঠেই। সকালের চা খেতে খেতে আমি মামা বাড়ির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাশের বাড়ির ছাদটাকে দেখা শুরু করলাম। ছাদটা কতটা লম্বা, কতটা পরিধি, কী ভাবে সেই ছাদ থেকে আমাদের বাড়ির ছাদে আসা যায়, ইত্যাদি। মামিকে জিজ্ঞেস করলাম এই ছাদে কী ভাবে যাওয়া যায়। মামী জানিয়েছিল ওই ছাদটা ডেড এন্ড। তাতে ওঠা যায় না, ওঠার রাস্তাও নেই। যে ছাদে আমি আগের দিন রাতে সাদা শাড়ি পরা অবয়বকে দেখেছিলাম, সেই বাড়িতে কেউ কোথাও কখনও থাকেনি। বাড়িটা সব সময়ে খালি পড়ে থাকত। আমার মামা-মামীর ওই অংশটা কিনে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মামা মামি এবং ভাই- এই তিন জনের জন্য এতটা বড় বাড়ির কোনও প্রয়োজন ছিল না। তাই ওই জমি বা বাড়ি খালিই পড়ে রয়েছে। বাড়ির মালিক থাকেন কলকাতায়। এর পর থেকে আমি সচেতন ভাবে মামাবাড়িতে যাওয়া এড়িয়ে যাই। আর গেলেও রাতে কখনও থাকতাম না। ১৪-১৫ বছর বয়সে মানুষের মনে অনেক ধরনের জীবন নিয়ে প্রশ্ন জাগে। ভুত বা ওই জগতের বাস্তবতা নিয়ে সে সময় আমার মনেও প্রচুর কৌতুহল তৈরি হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে সব কৌতূহলের নিরসনও হয়েছে। এর পরেও জীবনে নানা রকম ভৌতিক অভিজ্ঞতা হয়েছে। কিন্তু এক পূর্ণিমা রাতে মামারবাড়ির জানলা দিয়ে দেখা সেই ঘটনা আমার জীবনে এখন অবধি সেরা ভুতুড়ে অভিজ্ঞতা।

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2024 Ananda Utsav 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE