ক্যালিফোর্নিয়ার পুজো
ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রিমন্ট শহরে এক হিন্দু মন্দিরের মুক্তাঙ্গনে বাঙালির এক সাবেকি দুর্গা পুজো নিয়ে আসে জনস্রোত, আবেগ এবং ভক্তি। ঠিক দিনে দিনে সকল নিয়ম মেনে পাঁচ দিন ধরে চলে মা-এর আরাধনা। তার সঙ্গে থাকে সংস্কৃত মন্ত্রের আর পুজো প্রক্রিয়ার ভাষ্য, ব্যাখ্যা আর অনুবাদ। মুগ্ধ হয়ে শোনে স্থবির দর্শক।
স্বেচ্ছাসেবীরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাজিয়েছে মণ্ডপ। মুগ, মুসুর ও আরো অনেক ডাল এবং শস্যদানা দিয়ে এক অভিনব আলপনা আর মণ্ডপ সজ্জা তৈরি হয়েছে। তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সন্ধ্যা হলেই জ্বলে ওঠে সেই বিখ্যাত চন্দননগরের আলোকসজ্জা যা দেখতে দূর দূরান্ত থেকে আসে সবাই। নানা রঙের ও নকশার অনেক গুলি আলোর প্যানেল দিয়ে তৈরী হয়েছে তেরো হাত উঁচু দুটি আলোর সিংহদুয়ার যা স্বাগত জানায় দর্শকদের। মন্দির প্রাঙ্গনে আলোর ঝিকিমিকি মনে করিয়ে দেয় বাংলার কথা, ছোটবেলার পুজোর কথা। তার সঙ্গে চলে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
তবু এতো উৎসবের আবহাওয়ার মাঝেও প্রবাসী বাঙ্গালির মন চলে যায় সেই কলকাতা শহরে সদ্য ঘটে যাওয়া নৃশংসতার ঘটনায়। মনে প্রশ্ন আনে সমাজ সত্যিই কতদূর এগোতে পেরেছে! তারই রেশ টেনে এখানকার বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে সুচেতনা, আজকের নারীর স্বাতন্ত্র, তার মর্যাদা, তার ক্ষমতায়ন উপর ভিত্তি করে। এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় আজকের এই আধুনিক পৃথিবীতে দাঁড়িয়েও, নারীর বঞ্চনা কোনো দুর্লভ ঘটনা নয়।
প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে ফ্রিমন্ট-এর হিন্দু মন্দিরের এই পুজো শুধু প্রবাসী বাঙালি নয়, বিস্তৃত ভারতীয়, পরবর্তী প্রজন্ম ও আমেরিকার স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছে সেই পুজোর আবেগ আর নস্টালজিয়া।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy