(বাঁ দিকে) কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দ (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
দলের অন্দরে অন্তর্বিরোধের জেরে ইস্তফা দিতে চলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সোমবার নিজেই এই কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। সে দেশের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সের দলনেতার পদও ছাড়তে চলেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, কানাডার শাসকজোটের প্রধান দল ট্রুডোর লিবেরাল পার্টি। ইস্তফা দেওয়ার ঘোষণা করার পরেই ট্রুডোর উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। লিবারেল পার্টির পরবর্তী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে অন্য অনেকের সঙ্গে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দও।
ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টিও তড়িঘড়ি ট্রুডোর উত্তরসূরি বেছে নেওয়ার কাজ শেষ করতে চাইছে। কারণ চলতি বছরের শেষেই কানাডায় সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচনে লিবারেল পার্টির ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। বর্তমানে সে দেশের পরিবহণমন্ত্রীর পদে থাকা অনিতা ২০১৯ সাল থেকে কানাডার সাংসদ। তামিল পরিবারে জন্ম তাঁর। মা পঞ্জাবি। এর আগে কানাডার প্রতিরক্ষা দফতরের দায়িত্বও সামলেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী।
প্রধানমন্ত্রী এবং দলনেতা হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন অক্সফোর্ডের আর এক প্রাক্তনী, কানাডার বর্তমান বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি। একদা ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ছিলেন কানাডার প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। কিন্তু সকলকে অবাক করে দিয়ে গত ডিসেম্বরে হঠাৎই পদত্যাগ করেন তিনি। প্রকাশ্যে পদত্যাগের কারণ না-জানালেও শোনা গিয়েছিল নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ট্রুডোর সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণেই মন্ত্রিসভা ছেড়েছেন তিনি। দলের কঠিন সময়ে দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আছেন তিনিও। তা ছাড়াও আলোচনায় রয়েছে ব্যাঙ্ক অফ কানাডার গভর্নর এবং ট্রুডোর বিশেষ পরামর্শদাতা মার্ক কার্নে, কানাডার বিজ্ঞান এবং শিল্পমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া ফিলিপ শ্যাম্পেনের নামও।
২০১৩ সালে কানাডার পার্লামেন্টে লিবারেল পার্টি তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়ার পরে দলের নেতৃত্বে এসেছিলেন ট্রুডো। ২০১৫ সালের নির্বাচনে তিনি দলকে ক্ষমতায় ফিরিয়েছিলেন। তার পর থেকে একটানা ন’বছর প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন তিনিই। কিন্তু তাঁর অন্দরেই শোনা যাচ্ছে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে। যখনই ভোট হোক, লিবারেল পার্টির পরাজয় প্রায় নিশ্চিত। ঘটনাচক্রে আগামী ২০ জানুয়ারি কানাডার প্রতিবেশী আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব নিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আবহে সে দেশে নির্বাচন এগিয়ে আনা হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে।