শীর্ষ আদালতের বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটোর একটি খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী ( যে নথি ফাঁস হয়ে গিয়েছে) ১৯৭৩ সাল ‘রো ভার্সেস ওয়েড’ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে যে রায় দিয়েছিল তা খারিজ হয়ে যাবে। ওই মামলায় তৎকালীন বিচারপতিরা রায় দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় বা প্রাদেশিক সরকার গর্ভপাত নিষিদ্ধ করতে পারে না। কিছু শর্ত আরোপ করতে পারে।
প্রতিবাদ শুরু করেছেন নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা। ছবি এএফপি
যদি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গর্ভপাত অবৈধ হয়ে যায়, তবে আমেরিকা জুড়ে তার কতটা প্রভাব পড়বে? এখন এই প্রশ্নই ঘুরছে আমেরিকাবাসীর মনে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি নথি অনুযায়ী আমেরিকায় প্রায় অর্ধেক প্রদেশের মহিলারা গর্ভপাতের অধিকার হারাবেন।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটোর একটি খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী ( যে নথি ফাঁস হয়ে গিয়েছে) ১৯৭৩ সাল ‘রো ভার্সেস ওয়েড’ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে যে রায় দিয়েছিল তা খারিজ হয়ে যাবে। ওই মামলায় তৎকালীন বিচারপতিরা রায় দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় বা প্রাদেশিক সরকার গর্ভপাত নিষিদ্ধ করতে পারে না। কিছু শর্ত আরোপ করতে পারে। এক জন মহিলার নিজের দেহের উপরে একশো শতাংশ নিয়ন্ত্রণে রাখার অধিকার রয়েছে। সেই থেকেই আমেরিকার প্রতি প্রদেশে গর্ভপাতে অনুমতি দেওয়া হয়।
এই ফাঁস হয়ে যাওয়া নথিকে কেন্দ্র করে কার্যত দু’ভাগ আমেরিকা। নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা মনে করেছেন, সুপ্রিম কোর্ট নারীদের অধিকারে যে সুরক্ষা কবচ দিয়েছিল, সেটাই ৫০ বছর পরে কেড়ে নেবে শীর্ষ আদালত। অন্য দিকে গর্ভপাত বিরোধীরা চাইছেন একে অবৈধ ঘোষণা করে আদালত রায় দিক।
তবে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আদালত যদি রায় দেয়, তবে এখনই দেশজুড়ে গর্ভপাতকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। তার বদলে প্রতিটি প্রদেশ ঠিক করবে কতটা ছাড় দিয়ে তারা এই আইন প্রয়োগ করবে। তাঁরা মনে করছেন, আমেরিকার ৫০টি প্রদেশের মধ্যে অর্ধেক এই রায় এক সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োগ করবে।
তবে বাকি প্রদেশগুলি কেবল তাদের নিজেদের মহিলাদের নয়, যে প্রদেশগুলিতে গর্ভপাত অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে সেখানকার মহিলারাও যদি তাঁদের প্রদেশে এসে গর্ভপাত করাতে চান, তারও অনুমতি দেবে।
২০১৯ সালে আমেরিকার পিউ রিসার্চ সংস্থার সমীক্ষা জানাচ্ছে,৬২ শতাংশ আমেরিকাবাসী মনে করেন গর্ভপাত বৈধ হওয়া উচিত। ৩৮ শতাংশ একে অবৈধ করার পক্ষে। ২০২১ সালের একটি সংবাদমাধ্যমের সমীক্ষাতেও প্রায় এই তথ্য উঠে আসে।
আদালতের এই খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ্যে আসার পরে সরব হয়েছেন ডেমোক্র্যাটেরা। প্রতিবাদ শুরু করেছেন নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা।