মাটি খুঁড়লেই তেল মিলছে। অথচ জলের হাহাকার। আরব আমিরশাহির অবস্থা এমনই। ভূগর্ভস্থ যে পরিমাণ জল রয়েছে তাতে নুনের ভাগ এতটাই বেশি যে বহু পরিশোধনের পর তা পান করার যোগ্য করে তুলতে হয়।
পানীয় জল বলতে মূলত সমুদ্রের লবণাক্ত জলই ভরসা। বড় অঙ্কের টাকা খরচের পর পরিশোধন করে খেতে হয় সেই জল। কিংবা সুদূর আটলান্টিক মহাসাগর থেকে জাহাজ দিয়ে টেনে আনতে হয় হিমশৈল। সেই বরফ গলিয়ে তৈরি করে পানীয় জল।
বিশ্বের অন্যতম শুষ্ক দেশ এটি। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নগণ্য। পাল্লা দিয়ে যেন বেড়েই চলেছে তাপমাত্রাও।
নাজেহাল বাসিন্দাদের রেহাই দিতে এ বার ড্রোন হামলা করে কৃত্রিম ভাবে মেঘ থেকে বৃষ্টি ঘটালো এই দেশ।
ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ে ড্রোন দিয়ে বৃষ্টি আনার এই কৌশল আবিষ্কৃত হয়েছে।
এই প্রকল্পের অন্যতম গবেষক মার্টেন অ্যামবাউম জানিয়েছিলেন, আরব আমিরশাহির উপর যে পরিমাণ মেঘ পুঞ্জীভূত হয়ে থাকে তার থেকে কৃত্রিম ভাবে ভাল পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
কী ভাবে বৃষ্টি ঘটায় এই ড্রোন? আরব আমিরশাহির বৃষ্টি তৈরির বিজ্ঞান প্রকল্পের অধিকর্তা আল মাজরউয়ি জানান, ড্রোনে ইলেকট্রিক চার্জ নির্গতকারী যন্ত্র রয়েছে।
এই যন্ত্র নিয়ে মেঘের কাছে উড়ে যায় ড্রোন। মেঘের মধ্যে ধনাত্মক এবং ঋণাত্বক দু’ধরনের আয়নই রয়েছে।
এই দুই আয়নের ভারসাম্যের হেরফের ঘটিয়ে ইলেকট্রিক চার্জ নির্গতকারী যন্ত্রটি মেঘের মধ্যে থাকা জলকণাগুলিকে কাছাকাছি নিয়ে আসে।
জলকণাগুলি মিশে গিয়ে ক্রমে বড় জলকণায় পরিণত হয় এবং ভারী হয়ে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরতে শুরু করে।
২০১৭ সালে কৃত্রিম ভাবে বৃষ্টি করানোর জন্য দেড় কোটি ডলার ধার্য করেছে আরব আমিরশাহি।
ড্রোন দিয়ে বৃষ্টি ঘটানোর এই কৌশল ছাড়া আরও ভিন্ন ভিন্ন কৌশল নিয়ে কাজ চলছে। তার মধ্যে একটি হল বিমান থেকে মেঘের উপর নুনের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মারা।
এই প্রকল্পের জন্য গরমকাল সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। ওই সময় আল-হাজার পর্বতের উপরে মেঘ জমতে শুরু করে।
সম্প্রতি ড্রোন হামলায় বৃষ্টি ঘটানোর পরীক্ষায় সাফল্যও পেয়েছে দেশ। একটি ভিডিয়োয় বৃষ্টি হওয়ার দৃশ্যও ফুটে উঠেছে।