পাকিস্তানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে তালিবানি সেনা, দাবি সংবাদমাধ্যমের। — ফাইল চিত্র।
রাজনৈতিক স্বার্থে বছরের পর বছর তালিবানকে মদত দিয়ে এসেছে পাকিস্তান। অভিযোগ এমনটাই। এখন সেই তালিবানের প্রত্যাঘাতেই শিয়রে শমন পাকিস্তানের। আফগানিস্তানের পাকতিকায় পাকিস্তানি বিমানহানার ‘প্রতিশোধ’ নিতে বৃহস্পতিবার সীমান্ত অভিমুখে রওনা দিল তালিবানি সেনা। লক্ষ্য ইসলামাবাদ?
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-র একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার কাবুল, কান্দাহার, হিরাট-সহ আফগানিস্তানের নানা প্রদেশ থেকে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া সংলগ্ন মির আলি সীমান্তের দিকে রওনা দিয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার তালিবান যোদ্ধা। যদিও সরকারি ভাবে এখনও বিষয়টি নিশ্চিত করেনি কোনও পক্ষই।
বড়দিনের আগের রাতে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানের বিমান হামলায় প্রাণ যায় অন্তত ৪৬ জনের। আফগান সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকতিকার বারমাল জেলায় লামান-সহ সাতটি গ্রাম লক্ষ্য করে একের পর এক বিমান হামলা চালানো হয়। হামলায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় বারমালের মুর্গ বাজার গ্রামটি। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্তও ধ্বংসাবশেষ থেকে মৃতদেহ এবং আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারের কাজ চলেছে। হামলার পরেই পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দেয় আফগানিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তালিবান। তাদের দাবি, ওয়াজিরিস্তানের শরণার্থী শিবিরের নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে নিশানা করে এই হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, নিজেদের ভূমি এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে শীঘ্রই এই হামলার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। এই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই সীমান্তের উদ্দেশে রওনা হলেন তালিবান যোদ্ধারা।
২০১১ সালে পাকিস্তান প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে হিলারি ক্লিন্টন বলেছিলেন, ‘‘বাড়ির উঠোনে সাপ পুষলে সে শুধু প্রতিবেশীদেরই কামড়াবে, এমনটা আশা করা যায় না। এক দিন সেই সাপ বাড়ির মালিকের উপরেই চড়াও হয়।’’ হিলারির সেই কথাই যেন সত্যি হতে চলেছে! উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানি সেনার উপর হামলা বাড়িয়েছে আফগানিস্তানের পাক তালিবানি জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। উল্টো দিকে, পাকিস্তানও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে টিটিপি-কে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। এর পরেই আফগানিস্তানকে নিশানা করেছে পাকিস্তান। পাক-হামলার পর এ বার প্রত্যাঘাতে তালিবরাও।