রামায়ণের কুম্ভকর্ণ টানা ৬ মাস ঘুমতেন। আর যখন ঘুম ভাঙত সামনে যা পেতেন তাই খেয়ে ফেলতেন।
কঠিন সাধনার পর ব্রহ্মার কাছে থেকে তিনি ভুলবশত ঘুমের বর চেয়ে ফেলেছিলেন। তার পর থেকেই এক ঘুমে ৬ মাস কাটিয়ে দিতেন।
সম্প্রতি ‘বাস্তবের কুম্ভকর্ণ’-এর খোঁজ মিলল বাংলাদেশের মানিকগঞ্জে।
তিনি টানা ৩-৪ দিন ঘুমিয়ে কাটান। আবার যখন ঘুম ভাঙে একাই ৩-৪ জনের খাবার খেয়ে ফেলেন নির্দ্বিধায়।
এই আচরণের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে তিনি ‘কলির কুম্ভকর্ণ’!
ওই ব্যক্তির নাম ভোম্বল শীল। কুম্ভকর্ণের মতো বিশালাকার শরীর তার নয়। বরং শীর্ণকায় তিনি। ২০ বছর ধরে নাকি তিনি এমন অদ্ভুত ভাবে জীবনযাপন করছেন।
ছোটবেলায় অবশ্য ভোম্বলের আচরণে কোনও অস্বাভাবিকত্ব চোখে পড়েনি। তাঁর ঘুম এবং খাওয়াদাওয়া সাধারণের মতোই ছিল।
১৫ বছর বয়স থেকে ক্রমশ তাঁর আচরণে অস্বাভাবিকতা আসতে শুরু করে। ঘুমের পরিমাণ অত্যন্ত বেড়ে যায় তাঁর।
আর এখন এমন অবস্থা টানা ৩-৪ দিনই ঘুমিয়ে কাটান তিনি। এমনকী একবার নাকি টানা এক সপ্তাহ ঘুমিয়ে কাটিয়েছিলেন!
যখন ঘুমিয়ে থাকেন জলও খান না। মাঝে মধ্যে শৌচকর্মের জন্য উঠলেও সেখানে গিয়েও ঘুমিয়ে পড়েন।
স্বাভাবিক ভাবেই ভোম্বল রোজ স্নান করতে পারেন না। আবার যখন করেন অনেকটা সময়টা পুকুরে কাটান।
ভোম্বলকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল তাঁর পরিবার। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এটা একটা জটিল মানসিক রোগ। চিকিৎসায় সেরে উঠতে পারেন তিনি।
মনোবিদ সুজিত সরখেল বলেন, “এটা এক ধরনের মানসিক রোগ। ক্লুভার বুসি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হতে পারেন তিনি। এই রোগে খিদে এবং ঘুম দুটোই খুব বেশি পায়। টানা ৩-৪ দিন না খেয়ে থাকলে অস্বাভাবিক বিপাক হয় শরীরে। যা খুবই ক্ষতিকর।”
কিন্তু ভোম্বলের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। তাই তাঁদের পক্ষে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি।