সুনীতা উইলিয়ামস। — ফাইল চিত্র।
প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে সেই জুন মাস থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস)-এ আটকে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস। এ বার সেখানে বসেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে চলেছেন তিনি। সেই ব্যবস্থা করেছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা।
পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ৪০০ কিলোমিটার উপরে আইএসএসে রয়েছেন সুনীতারা। সেখানে জুন মাসে পৌঁছে গবেষণা সেরে আট দিন পরে পৃথিবীতে ফেরার কথা থাকলেও সুনীতা এবং তাঁর সহযোগী তা পারেননি। বোয়িং সংস্থার যে স্টারলাইনার মহাকাশযানে চেপে তাঁরা গিয়েছিলেন সেখানে, সেই যানে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা গিয়েছিল। হিলিয়াম গ্যাস লিক করছিল বলে কাজ শেষ হয়ে গেলেও তাতে চেপে পৃথিবীতে ফিরতে পারেননি সুনীতারা। এ বার সেই আইএসএসে বসেই ভোট দেবেন আমেরিকার নাগরিক সুনীতা। ১৯৯৭ সাল থেকে মহাকাশে বসে আমেরিকার ভোটে অংশ নিতে পারেন সে দেশের নাগরিক-মহাকাশচারীরা। সে বছর টেক্সাসের আইনসভা একটি বিল পাশ করেছিল, যাতে নাসার মহাকাশচারীরা মহাকাশে বসেই ভোট দিতে পারেন। আমেরিকার মহাকাশচারী ডেভিড উলফ প্রথম মহাকাশে বসে ভোট দিয়েছিলেন। মির স্পেস স্টেশনে বসে ভোট দিয়েছিলেন তিনি। ২০২০ সালে শেষ বার আইএসএস থেকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন কেট রুবিনস।
কী ভাবে মহাকাশে বসে ভোট দিতে পারবেন সুনীতা? তিনি সশরীরে ভোটদান করতে পারবেন না জানিয়ে প্রথমে ‘ফেডেরাল পোস্ট কার্ড’ আবেদনের ফর্ম পূরণ করতে হবে সুনীতাকে। সেই ফর্ম পূরণ হলে আইএসএসের কম্পিউটার সিস্টেমে থাকা বৈদ্যুতিন ব্যালট পূরণ করতে হবে তাঁকে। নাসার ‘স্পেস কমিউনিকেশন অ্যান্ড নেভিগেশন’ (এসসিএএন)-এর উপর নির্ভর করছে মহাকাশ থেকে ভোটদানের প্রক্রিয়া। সুনীতা ব্যালট পূরণ করার পর সেই তথ্য উপগ্রহ প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। নিউ মেক্সিকোতে নাসার ‘হোয়াইট স্যান্ড টেস্ট ফেসিলিটি’-র অ্যান্টেনায় ধরা পড়বে বৈদ্যুতিন ব্যালটের সেই তথ্য। তার পর তা সুরক্ষিত ভাবে পৌঁছে দেওয়া হবে হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টারে মিশন কন্ট্রোল সেন্টারের হাতে।
ওই বৈদ্যুতিন ব্যালট কিন্তু এনক্রিপটেড থাকবে। সুনীতা কাকে ভোট দিয়েছেন, কেউ জানতে পারবে না। হিউস্টন থেকে বৈদ্যুতিন ব্যালটটি পৌঁছবে নির্দিষ্ট কাউন্টির কর্মীর কাছে। সেই কর্মী ছাড়া আর কেউ জানতে পারবেন না যে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সুনীতা কাকে ভোট দিয়েছেন।