—প্রতীকী চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে প্রথম চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। সোমবার দুপুরে চার্জশিট নিয়ে শিয়ালদহ আদালতে যান সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। সূত্রের দাবি, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে এক জনের নামেরই উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। পাশাপাশি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ-সহ বেশ কিছু প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে। জিজ্ঞাসাবাদে কে কী জানিয়েছেন, সেই বয়ানের নথি তুলে ধরা হয়েছে চার্জশিটে।
নির্যাতিতার মৃত্যুর ৫৮ দিন পর এই চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। আরজি করের নির্যাতিতা মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর পর থেকে, বিচারের দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা। চলছে অনশন কর্মসূচি। সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মাঝে এক বার বিচারের দাবিতে সিবিআই দফতর অভিযানও করেছেন তাঁরা। ধর্মতলার অনশনমঞ্চ থেকেও জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, তাঁরা সিবিআইয়ের উপর আর আস্থা রাখতে পারছেন না। এরই মধ্যে ধর্ষণ ও খুনের মামলার তদন্তে প্রথম চার্জশিট নিয়ে সোমবার আদালতে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
যদিও সিবিআইয়ের এই চার্জশিট নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। সোমবার দুপুরে ধর্মতলায় অনশনমঞ্চ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই সময় আন্দোলনকারীদের অন্যতম প্রতিনিধি দেবাশিস হালদার বলেন, “সংবাদমাধ্যম থেকে যা তথ্য পেয়েছি, সেই অনুযায়ী এটি একটি প্রাথমিক চার্জশিট। তার ভিত্তিতে এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলব। তার পরে এই বিষয়ে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাব।”
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত এক জনই। সিবিআই তদন্তভার নেওয়ার আগেই কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। পরে আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই— আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি। যদিও সিবিআই আগেই শিয়ালদহ আদালতে জানিয়েছে, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় প্রত্যক্ষ যোগের অভিযোগ নেই তাঁদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরজি করের ঘটনায় একজনই জড়িত, নাকি একাধিক—সেই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে ঘুরপাক খেতে শুরু করেছিল। তবে সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়ার বিষয়ে তাদের আইনজীবীরা এত দিন পর্যন্ত নিম্ন আদালতে বা সুপ্রিম কোর্টের সওয়াল-জবাবে যা যা তথ্য তুলে ধরেছেন, তাতে একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার কোনও আভাস মেলেনি। সূত্রের খবর, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় এ বার প্রথম চার্জশিটেও মূল অভিযুক্ত হিসাবে এক জনের কথাই উল্লেখ করল সিবিআই।
প্রসঙ্গত, আরজি কর মামলার সংবেদনশীলতা ও গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিগত শুনানিগুলিতে বিশেষ কিছু মন্তব্য করেননি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তবে তদন্তের অগ্রগতি প্রসঙ্গে একাধিক স্টেটাস রিপোর্ট জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সিবিআইয়ের তদন্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি।