নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদনের শুনানি শেষ হল কলকাতা হাই কোর্টে। তবে রায়দান স্থগিত রাখলেন বিচারপতিরা। সোমবার হাই কোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে পার্থের জামিনের মামলার শুনানি ছিল। ওই বেঞ্চ জানিয়েছে, মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। আপাতত রায়দান স্থগিত থাকবে। মনে করা হচ্ছে, পুজোর পরে এই মামলার রায়দান হতে পারে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ ছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছিল সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ শিক্ষা দফতরের একাধিক আধিকারিককে। সোমবার তাঁদের জামিন মামলার শুনানিও ছিল হাই কোর্টে। সেই শুনানিও শেষ হয়েছে। রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে। ষষ্ঠী থেকে হাই কোর্টে পুজোর ছুটি শুরু হচ্ছে। আদালত বন্ধ থাকবে নভেম্বর পর্যন্ত। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আদালত খুললে পার্থদের মামলার রায়দান হতে পারে।
হাই কোর্ট আগেই জানিয়েছিল, পুজোর আগে পার্থের জামিন মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তা ছাড়া, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে পার্থের বিরুদ্ধে ইডির মামলায় জামিনের আর্জিটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। শীর্ষ আদালতে সেই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ১৭ অক্টোবর। অর্থাৎ, পুজোর পরে। ফলে পুজোর আগে যে পার্থের জেলমুক্তি হচ্ছে না, তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এই নিয়ে টানা তিন বছর দুর্গাপুজোয় জেলে থাকছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালে পার্থকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার আগে তাঁর নাকতলার বাড়িতে চলেছিল দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে ওই সময়েই হানা দিয়েছিল ইডি। টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। পরে অর্পিতার আরও একটি ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধার হয়। মোট উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ ছিল ৪৯ কোটি ৮০ লাখ। ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলাতেও পার্থ-সহ সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শান্তিপ্রসাদ সিংহ-সহ বেশ কয়েক জন শিক্ষাকর্তা গ্রেফতার হয়েছিলেন। সিবিআইয়ের দায়ের করা ওই মামলায় জামিন চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা।
হাই কোর্টে জামিনের সপক্ষে পার্থের আইনজীবীর যুক্তি ছিল, তিনি আর প্রভাবশালী নন। কোনও পদে তিনি নেই। তাঁর পাশেও কেউ নেই। ফলে কেন্দ্রীয় সংস্থা যে প্রভাবশালী তত্ত্ব পার্থের বিরুদ্ধে খাড়া করেছিল, তা আর প্রযোজ্য হতে পারে না। এই সূত্রে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল, বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের প্রসঙ্গও তুলেছেন পার্থের আইনজীবী।