‘মুজিব বৃত্তি’ অনুষ্ঠানে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি পিটিআই।
বুধবার তাঁর সফরের তৃতীয় দিনের বিকেলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহত অথবা গুরুতর ভাবে জখম হওয়া ভারতীয় সেনাদের পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্যদের হাতে ‘মুজিব বৃত্তি’ তুলে দিলেন হাসিনা। সেই আবেগদীপ্ত অনুষ্ঠানে তাঁর পাশে ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওই পরিবারগুলির মাধ্যমিক স্তরের ১০০ জন শিক্ষার্থীকে ৫০০ ডলার এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ১০০ শিক্ষার্থীকে ১০০০ ডলার বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।
হাসিনা আজ ভারতীয়দের রক্ত-ঋণের কথা দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, শেখ হাসিনার চলতি সফরের একটি লক্ষ্য তো রয়েছেই ভারত থেকে তাদের বকেয়া দাবিগুলিকে আদায় করে বাংলাদেশের ঘরোয়া রাজনীতিকে শান্ত করা। সামনেই ভোট। ফলে দেশের মধ্যে ভারত-বিরোধী কট্টরপন্থী অংশটি যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে দিকে সতর্ক নজর রাখতে চাইছে আওয়ামী লীগ সরকার। পাশাপাশি একই ভাবে মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের বীরত্ব এবং আত্মত্যাগের স্মৃতিকে নতুন করে ফিরিয়ে এনে তাঁর দেশবাসীর সামনে তুলে এনেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আজ তাই তাঁর স্বল্পমেয়াদী বক্তৃতায় একাধিক বার এই প্রসঙ্গ এসেছে। হাসিনা বলেছেন, “নিজের দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ অনেকেই করে। কিন্তু বন্ধু প্রতিবেশীর জন্য নিজের বলিদান দেওয়ার ঘটনা বিরল।” তাঁর কথায়, “আমরা যেন ভুলে না যাই ১ কোটি বাংলাদেশি শরণার্থীকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে, চিকিৎসা করেছে, বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছে। আমাদের এই বিষয়গুলিকে মনে রাখতে হবে। তবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অটুট থাকবে। ভারত এবং বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি উন্নত হবে। দু’দেশের বন্ধুত্ব অটুট থাক এটাই আমি চাই।” ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ককে বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসেবেও বর্ণনা করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।