প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মহম্মদ মুইজ়ু (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী। তাঁদের সাসপেন্ড করা হলেও বিতর্কের ঝড় এখনও থামেনি। দ্বীপরাষ্ট্রটির বিরোধী দলগুলি এই বিতর্কে কার্যত ভারতের পাশে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। এই আবহেই চিন সফররত মলদ্বীপের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার প্রস্তাব দিলেন সে দেশের এক বিরোধী নেতা।
সোমবার মলদ্বীপের পার্লামেন্টের সংখ্যালঘু দলের নেতা আলি আজ়িম নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “আমরা চাই দেশের বিদেশনীতিতে স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক এবং কোনও প্রতিবেশী দেশকে কোণঠাসা করার চেষ্টা বন্ধ হোক।” তার পরই তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, প্রেসিডেন্ট পদে থাকার মতো যোগ্যতা মুইজ়ুর রয়েছে কি না। এর পাশাপাশি তিনি প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলেন। ডেমোক্র্যাটিক দলের আর এক নেতা মিকাইল নাসিম আবার বিদেশমন্ত্রীকে তলব করে কৈফিয়ত চাওয়ার জন্য পার্লামেন্টকে অনুরোধ করেন। ভারতের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করা হলেও কেন মন্ত্রী পদক্ষেপ করেননি, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
দেশের বিরোধী দলের অন্যতম নেতা তথা প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিয়া আহমেদ দিদি ভারতের সঙ্গে ‘পুরনো বন্ধুত্ব’ নষ্ট করার জন্য মুইজ়ুর দলের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি জানান যে, মলদ্বীপ সর্বদাই ভারতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতিতে আস্থা রেখেছে। দেশের প্রাক্তন যুব এবং ক্রীড়ামন্ত্রী আহমেদ মাহলুফের বক্তব্য, বিতর্ক না থামলে আর ভারতীয়রা মলদ্বীপকে ‘বয়কট’ করতে থাকলে সে দেশের অর্থনীতিতে বড়সড় প্রভাব পড়বে। এই বিষয়ে নিজের আশঙ্কার কথাও জানান তিনি।
সম্প্রতি লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন মোদী। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল করা হয়। অভিযোগ, মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী তেমনই কিছু ছবিতে মোদীকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। পরে বিতর্কের মুখে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়। কূটনৈতিক মাধ্যমে এই নিয়ে আগেই নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছিল ভারত।
সোমবার মলদ্বীপের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বিদেশ মন্ত্রক। তার কিছু পরেই ভারতের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে মলদ্বীপ। বিতর্কের গোড়া থেকেই সরাসরি মুইজ়ুর সমালোচনা করে কার্যত ভারতের পাশে দাঁড়ান দেশের দুই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলি এবং মহম্মদ নাসিদ। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে মুইজ়ুর গদিই এ বার টলমল করে কি না, তা-ই এখন দেখার।