(বাঁ দিক থেকে) গোহর আলি খান, আলি আমিন গান্দারপুর, ইমরান খান, জেনারেল আসিম মুনির। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
শুক্রবার দুপুরে পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন আদালত আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছর জেলের সাজা দিয়েছে তাঁকে। ঘটনাচক্রে, তার কয়েক ঘণ্টা আগে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গড়া দল ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ (পিটিআই)-এর দুই শীর্ষনেতা বৈঠক করেছেন পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে!
পাক সংবাদপত্র ‘দ্য ডন’ জানাচ্ছে, ওই বৈঠকে পিটিআইয়ের কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান গোহর আলি খান এবং দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তথা খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দারপুর হাজির ছিলেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শুক্রবার সকালে গোহর প্রথমে সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের কথা অস্বীকার করেন। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়ে বলেন, ‘‘হ্যাঁ। আলোচনা হয়েছিল।’’
তবে কী বিষয়ে জেনারেল মুনিরের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে কিছুই বলেননি তিনি। ঘটনাচক্রে, ইমরান ২০২২ সালের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে পাক সেনাকর্তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকেরা সেনানিবাসে হামলাও চালিয়েছেন। এই আবহে সেনাপ্রধানের সঙ্গে পিটিআই নেতাদের বৈঠকে ‘অন্য ইঙ্গিত’ পাচ্ছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনীতির ‘মূলস্রোতে’ টিকে থাকতে সেনার সঙ্গে সমঝোতা করতে সক্রিয় হয়েছেন গোহর-আমিনেরা।
প্রসঙ্গত, আল কাদির ট্রাস্টের নির্মীয়মাণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেআইনি ভাবে ১৯ কোটি ডলার (প্রায় ১৬৪৫ কোটি হাজার কোটি ভারতীয় টাকা) তছরুপের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে ইমরান, তাঁর স্ত্রী বুশরার বিরুদ্ধে। পাক তদন্তকারী সংস্থা ‘ন্যাব’ (ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো) এই মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিল। ২০২৩ সালের ১ মে ইমরানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল তারা। তার পরেই পাক আধাসেনা রেঞ্জার্স বাহিনী তাঁকে আদালত চত্বর থেকে গ্রেফতার করেছিল। বুশরার এই মামলায় সাত বছরের জেল হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষ আদালতের বিচারক নাসির জাভেদ রানা শুক্রবার ইমরানের ১০ লক্ষ এবং বুশরার ৫ লক্ষ পাকিস্তানি রুপি জরিমানা করেছেন।