ফাইল ছবি।
ঋণ ভারে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানকে উন্নয়নের সকাল দেখানোর স্বপ্ন ফিরি করে ২০১৮-য় ক্ষমতায় আসে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। প্রধানমন্ত্রী হন ’৯২ বিশ্বকাপ জয়ী পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ইমরান খান। গত চার বছরে চেনাব-সিন্ধু দিয়ে অনেক দল বয়ে গিয়েছে। নীতিপঙ্গুত্বের করাল গ্রাস কি শেষমেশ এড়াতে পেরেছে পাকিস্তান? অন্তত প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বক্তব্যে তা মনে হচ্ছে না। সম্প্রতি একটি সরকারি অনুষ্ঠানে ইমরান বলেন, ‘‘আমি দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দেশের আমলাতন্ত্র সেই অভিঘাত সইতে পারল না।’’
অনুষ্ঠান ছিল দেশের সবচেয়ে সফল ১০টি মন্ত্রক ও দফতরকে পুরস্কার প্রদানের। সরকারি সেই মঞ্চকে ব্যবহার করেই নিজের খেদ ব্যক্ত করলেন ইমরান। শুধু আমলাতন্ত্রকেই দোষারোপ নয়, প্রধানমন্ত্রী ইমরান বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, সরকার এবং দেশের মানুষের স্বার্থের কোনও সংযোগ-সেতু নেই।" পাকিস্তানের ‘ডন’ সংবাদপত্রে বেরিয়েছে এই প্রতিবেদন। তাতে বলা হয়েছে, তেল ও বিদ্যুতের দামের ব্যাপক বৃদ্ধি খান সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। দুর্নীতি ও শ্লথগতির আমলাতান্ত্রিক গতিবিধির স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইসলামাবাদের তখ্ত দখল করা ইমরানের বিরুদ্ধে ইদানীং সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল, প্রতিশ্রুতি পালন না করার। কারণ দৃশ্যত পাকিস্তানের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য ভাবে নিম্নগামী। লাগাম পরানো যাচ্ছে না মুদ্রাস্ফীতিতে। উল্টো দিকে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে আন্তর্জাতিক বাজারে ঋণের বোঝা।
ক’দিন আগেই প্রায় গোটা মন্ত্রিসভা নিয়ে চিন সফরে গিয়েছিলেন ইমরান। সরকারি ভাবে অবশ্য বলা হয়েছিল, তিনি শীতকালীন অলিম্পিক্সের উদ্বোধনে অংশ নেবেন। কিন্তু সপার্ষদ ইমরান চিনের প্রিমিয়ার এবং সে দেশের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, আর্থিক অনুদান এবং ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি সরাসরি লাল চিনের সহায়তা প্রার্থনা করেছেন। সব মিলিয়ে দিশেহারা অবস্থা ‘অচ্ছে দিন’-এর স্বপ্ন দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসা ইমরানের।
ইমরান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এত সহজে হাল ছাড়ার বান্দা নন তিনি। কিন্তু নিজের পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন যে সম্ভব হচ্ছে না, সম্ভবত তা বুঝতে পেরেই তিনি বলেন, ‘‘আমি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই পরিবর্তনের অভিঘাত সওয়ার ক্ষমতা নেই দেশের আমলাতন্ত্রের।’’