বাবা-মার সঙ্গে মেলিসা। ছবি: সংগৃহীত।
ছোটবেলায় অপহরণ করা হয়েছিল মেয়েকে। অপহরণের ৫১ বছর পর মা-বাবার সঙ্গে আবার মিল মেয়ের! আমেরিকার টেক্সাসের ঘটনা।
১৯৭১ সালের ২৩ অগস্ট টেক্সাসের ফোর্ট ওয়ার্থের বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়েছিল মেলিসা হাইস্মিথকে। তখন অনেক খুঁজেও মেলিসাকে মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দিতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছোট্ট মেলিসাকে দেখভালের দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তিনিই অপহরণ করেন নিয়ে যান শিশুটিকে।
মেলিসার মা, আলতা আপান্তেনকো, একটি সংবাদপত্রে মেয়েকে দেখভালের জন্য লোক চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। এক মহিলা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁকেই মেলিসাকে দেখাশোনার দায়িত্ব দেন আলতা। কিন্তু কাজে যোগ দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই মেলিসাকে অপহরণ করে চম্পট দেন অভিযুক্ত মহিলা। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেও কোনও লাভ হয়নি।
এর পর টানা ৫১ বছরের ব্যবধান। মেলিসার মা-বাবা এখন অশতীপর বৃদ্ধ। চার ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিকে নিয়ে তাঁদের ভরা সংসার। ভুলতেও বসেছিলেন যে মেলিসা বলে তাঁদের এক মেয়ে ছিল। তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে, মেলিসাদের পরিবারের এক আত্মীয় খবর পান যে ফোর্ট ওয়ার্থের কাছেই এক শহরে এমন এক জনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যাঁর শরীরে হুবহু মেলিসার মতো জন্মদাগ আছে। মিলে যাচ্ছে জন্মদিনও। তড়িঘড়ি ওই শহরে পৌঁছে ওই মহিলার ডিএনএ পরীক্ষা করান মেলিসার মা-বাবা। ডিএনএ রিপোর্ট হাতে আসার পর দেখা যায়, এই সেই মেলিসা যাঁকে ৫১ বছর বাবা-মার কাছ ছাড়া হতে হয়েছে।
সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছেন মেলিসা। বাবা-মা এবং বাকি পরিবারকে পেয়ে তিনি বেশে আনন্দেই আছেন। গত শনিবার ফোর্ট ওয়ার্থের একটি গির্জায় মেলিসা, তাঁর মা-বাবা এবং চার ভাইবোনকে এক সঙ্গে উল্লাস করতে দেখা গিয়েছে। মেলিসাকে ফিরে পাওয়ার খুশিতে।
মেলিসার বোন শ্যারন হাইস্মিথ বলেন, ‘আমাদের পরিবারকে তদন্তকারী পুলিশ হেনস্থা করেন। আমাদের বলা হয় যে ওকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এখন আমরা মেলিসাকে পেয়ে খুশি। এত বছর ওকে কাছে পাইনি। বাকি দিনগুলি আমরা হইহই করে আনন্দে কাটাতে চাই।’