অনলাইন কনসার্টে গান গাইছেন ইরানের শিল্পী পারাস্তু আহমাদি। ছবি: সংগৃহীত।
হিজাব পরেননি। কালো রঙের যে পোশাকটি পরেছেন, তারও কাঁধখোলা। স্বল্পবসনা সঙ্গীতশিল্পীকে এ বার শাস্তির মুখে পড়তে হল ইরানে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ওই তরুণীকে ইরানে মহিলাদের পোশাকবিধির বিরুদ্ধে আগেও সরব হতে দেখা গিয়েছে।
ইরানের শিল্পী পারাস্তু আহমাদি। সম্প্রতি একটি অনলাইন কনসার্টে গান করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন তিন জন পুরুষ। তাঁরা ওই তরুণীর ব্যক্তিগত ব্যান্ডের সদস্য। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করছে ইরান সরকার। তাঁদের কী শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ইরানে মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাকবিধি রয়েছে। সে দেশের আইন অনুযায়ী, মহিলাদের সর্বত্র হিজাব পরে থাকতে হয়। এমনকি, ইরানের মহিলারা প্রকাশ্যে একক সঙ্গীত গাইতে পারেন না। নানা সময়ে ইরানের অভ্যন্তরেই এই ধরনের আইনের বিরোধিতা হয়েছে। কিছু দিন আগে পোশাকবিধির প্রতিবাদে ইরানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক তরুণী শুধু অন্তর্বাস পরে ঘুরেছিলেন। প্রকাশ্যে হেঁটেছিলেন হিজাব ছাড়াই। তাঁকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ইরানি প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, তরুণীর মানসিক সমস্যা রয়েছে। তাই তাঁকে মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার পর থেকে তাঁর আর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পারাস্তুর অনলাইন কনসার্ট ইউটিউবে সম্প্রচারিত হয়েছে। তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেয় ইরান প্রশাসন। ইরানের মধ্যেই ওই কনসার্টের রেকর্ডিং রয়েছে। এর আগেও পারাস্তু একাধিক বার পোশাকবিধির বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুগামীর সংখ্যাও কম নয়। ২০২২-২৩ সালে পোশাকবিধির বিরুদ্ধে ইরান জুড়ে যে প্রতিবাদ হয়েছিল, সে সময়েও পারাস্তু হিজাব ছাড়া গান গেয়ে একাধিক ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন। একটি ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি পারাস্তু এবং আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আমি আমার দেশকে ভালবাসি এবং এই দেশের জন্য আমি গান গাওয়া থামাব না।’’
বৃহস্পতিবার ইরানের বিচার বিভাগ পারাস্তুর নাম না করে জানিয়েছে, এক মহিলা সঙ্গীতশিল্পীর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে। আইন ভেঙে ধর্মীয় অনুশাসন না মেনে তাঁরা গান গেয়েছেন।
উল্লেখ্য, মহিলাদের বিরুদ্ধে আইন আরও কঠোর করতে চলেছে ইরান। শুক্রবারই সেই সংক্রান্ত নতুন আইন আসার কথা। যাঁরা পোশাকবিধি লঙ্ঘন করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর শাস্তির নিদান দিতে পারে ইরান সরকার।