৯ মের পর থেকে ধরপাকড় নিয়ে শীর্ষ আদালতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের আর্জি জানালেন ইমরান। — ফাইল ছবি।
গত ৯ মে হিংসার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ধৃত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থকদের ধরপাকড়ের ঘটনা নিয়ে এ বার শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন পিটিআই প্রধান তথা প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শীর্ষ আদালতকে কর্মী নিগ্রহের ঘটনার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুরুর আবেদন জানিয়েছেন ইমরান। তাঁর অভিযোগ, পিটিআইয়ের মহিলা কর্মীদের শাস্তি হিসাবে ধর্ষণের মুখে পড়তে হচ্ছে। এমনই প্রতিবেদনে জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদপত্র ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’।
রবিবার, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, ইমরান সহানুভূতি আদায়ের লক্ষ্যে ভুয়ো এনকাউন্টার এবং ধর্ষণের ঘটনা সাজানোর চেষ্টা করছেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি কল রেকর্ড করে এই খবর জানতে পেরেছেন বলেও রানার দাবি।
রানা অভিযোগ করেন, ইমরান পরিকল্পনা করেছেন তাঁর দলেরই কোনও নেতার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান এবং ভুয়ো গুলি চালানোর। যাতে গোটা দুনিয়ার সামনে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতিহিংসার মনোভাব স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা যায়। এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, রানার দাবি, একই সঙ্গে মহিলা পিটিআই কর্মীকে ধর্ষণ করে সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে ইমরানের। রেকর্ড করা ফোন কলে এই ঘটনাও জানা গিয়েছে। গোটা পরিকল্পনা মূল উদ্দেশ্য বিশ্বের সামনে সহানুভূতি কুড়োনো। সানাউল্লাহ যদিও নিজের দাবির পক্ষে কোনও প্রমাণ তুলে ধরেননি। এর পরেই পাল্টা জবাব দেন ইমরান।
রবিবার লাহোরের জ়ামান পার্কের বাড়ি থেকে ইমরান একটি জনসভায় ভাষণ দেন। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘রানা সানাউল্লাহের সাংবাদিক বৈঠকের পর আমার আর কোনও সন্দেহ নেই। যে ভাবে পিটিআইয়ের মহিলা কর্মীদের আটক করে জেলে ভরা হয়েছে এবং যে ভাবে তাঁদের রাখা হচ্ছে, তাতে ধর্ষণের কথাও শুনতে পাচ্ছি।’’
ইমরানের পাল্টা দাবি, ‘‘রানার সাংবাদিক বৈঠক থেকে দু’টি জিনিস পরিষ্কার। প্রথমত, তাঁরা ভীত যে এই মহিলারা মুক্তি পেয়ে বাইরে গেলে তাঁদের সঙ্গে যা যা হয়েছে তা সমস্ত খুলে বলবেন। তাই নতুন নতুন গল্প বানানো হচ্ছে। অথবা, তাঁরা নিজেরা বুঝতে পারছেন, খুব বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। এ বার সেই ভুলকে ঢাকার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চলছে রানার মনগড়া বিভিন্ন গল্পের মাধ্যমে।’’
৯ মে আদালত চত্বর থেকে ইমরানকে গ্রেফতার করার পর থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে পাকিস্তান। ইমরানের গ্রেফতারির প্রতিবাদে পথে নামে পিটিআই কর্মী, সমর্থকেরা। অনেক জায়গাতেই পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েন পিটিআই কর্মী, সমর্থকেরা। এই প্রেক্ষিতেই শুরু হয় ধরপাকড়। ইমরানের অভিযোগ, তাঁর সদস্য, সমর্থকদের ধরে নিয়ে গিয়ে অকথ্য অত্যাচার করছে পাকিস্তান সরকারের পুলিশ। মহিলা সমর্থকদের ইমরানকে সমর্থন করার জন্য ধর্ষণ করা হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত দেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তার পরেই এ ব্যাপারে শীর্ষ আদালতকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করারও আর্জি জানান তিনি।
অন্য দিকে ইমরানের উপরেও চাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার পক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন পিএমএল (এন) প্রধান নওয়াজ় শরিফ।