মৃত্যুর পর দেহ সংরক্ষণ করার রীতি বহু প্রাচীন। মিশরের মমি তার উদাহরণ। কিন্তু জানেন কি বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিদের দেহাংশও বছরের পর বছর ধরে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে?
১৬৪২ সালের ৪ জানুয়ারি মৃত্যু হয়েছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলির। তাঁর বুড়ো আঙুল এবং মধ্যমা আজও রাখা রয়েছে জাদুঘরে। ইতালির ‘মিউজিয়াস অব দ্য হিস্ট্রি অব সায়েন্স’ নামে জাদুঘরে রয়েছে।
সংরক্ষণ করে রাখা রয়েছে তাঁর কিছু দাঁত এবং মেরুদণ্ডের কশেরুকা। এই সমস্ত শরীরের অংশগুলি আসলে ১৭৩৭ সাল থেকে জাদুঘরে রাখা। ওই সময় একটি স্মৃতিসৌধ থেকে অন্য সৌধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তাঁর মৃতদেহ। তখনই এগুলি খুলে পড়ে যায়।
অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। ৪ মার্চ, ১৮৭৯ জার্মানির উলমা শহরে জন্ম। ১৯০৫ সাল ছিল আইনস্টাইনের জীবনের অন্যতম বিস্ময়কর বছর। এই বছরে তাঁর তিনটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। যা বিজ্ঞানের দুনিয়ায় নতুন দিশা দেখিয়েছিল। এই সব নতুন আবিষ্কারের একটির সূত্রেই আইনস্টাইনের নোবেল পুরস্কার।
১৯৫৫ সালে মৃত্যু হয় তাঁর। দেহের ময়নাতদন্ত করেছিলেন থমাস হার্ভে নামে এক চিকিত্সক। গবেষণার জন্য তিনি তাঁর মস্তিষ্কের ২৪০টি টুকরো করেছিলেন। তার কিছু টুকরো সংরক্ষণ করা রয়েছে ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব হেল্থ অ্যান্ড মেডিসিন-এ। বাকি অর্ধেক রয়েছে ফিলাডেলফিয়ার একটি জাদুঘরে।
আইনস্টাইনের চোখও সতর্কভাবে খুলে বার করে নিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। তাঁর দু’টি চোখ সংরক্ষিত রয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটির একটি জাদুঘরে।
ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নের মৃত্যু হয় ১৮২১ সালে। তাঁর যৌনাঙ্গ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।
সম্রাটের মৃত্যুর পর এক ব্রিটিশ চিকিৎসক তাঁর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেছিলেন। তখনই তিনি নেপোলিয়নের লিঙ্গ দেহ থেকে আলাদা করে নিয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালে ২৯০০ ডলারে আমেরিকার একজন ইউরোলজিস্ট সেটি কিনেছিলেন।
২০০৭ সাল পর্যন্ত সেটি তিনি বাক্সবন্দি করে নিজের বিছানার নীচে রাখতেন। ২০০৭-এ তাঁর মৃত্যু হয়। এবং ২০১৬ সালে ফের একবার নিলামে ওঠে নেপোলিয়নের লিঙ্গ।
বিজ্ঞানী থমাস এডিসনের মৃত্যু হয় ১৯৩১ সালে। শুনতে অবাক লাগলেও তাঁর শেষ নিঃশ্বাস সংরক্ষণ করে করা রয়েছে।
জীবনের শেষ সময়ে হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে সর্বক্ষণ থাকতে বলা হয়েছিল তাঁর ছেলে চার্লসকে। অটোমোবাইল ব্যবসায়ী হেনরি ফোর্ড একটি টেস্ট টিউব দিয়েছিলেন চার্লসকে। ফোর্ড ছিলেন বিজ্ঞানী থমাসের ব্যবসার অংশীদারও।
বাবার শেষ নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় টেস্ট টিউবটি তাঁর মুখে ধরেন চার্লস। সেই টেস্টটিউবে আজও বন্দি বিজ্ঞানীর শেষ নিঃশ্বাস। মিশিগানের হেনরি ফোর্ড মিউজিয়ামে রাখা রয়েছে সেটি।