মত্ত হয়ে গাড়ি চালানোর দায়ে জেলে ভুয়ো বরিস জনসন। — ফাইল ছবি।
মাঝরাস্তায় পড়েছিল একটি গাড়ি। চালকের পাত্তা নেই। পুলিশ গিয়ে গাড়ির দরজা খুলে ভিতরে তল্লাশি চালায়, যদি মালিক বা চালকের কোনও খোঁজ মেলে। খুঁজতে খুঁজতেই বেরিয়ে আসে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স। যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। লাইসেন্সটি বরিস জনসনের। ছবিও ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীরই। এমনকি জন্মদিনও মিলে যাচ্ছে! তবে বেশি ক্ষণ পুলিশকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। দেখা যায়, লাইসেন্সটির মেয়াদ ফুরোচ্ছে ৩০০০ সালে! পরে অবশ্য গাড়ির মালিককে খুঁজে পায় পুলিশ। তাঁকে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজব এই ঘটনাটি ঘটেছে নেদারল্যান্ডসে।
ডাচ পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, রবিবার মধ্যরাতে পুলিশ খবর পায় একটি গাড়ি দুর্ঘটনার। জানা যায়, একটি গাড়ি সজোরে ধাক্কা মেরেছে লোহার স্তম্ভে। পুলিশ পৌঁছে দেখে মাঝরাস্তার উপর থমকে থাকা গাড়িতে কেউ নেই। কার গাড়ি খুঁজতে পুলিশ গাড়ির ভিতরে তল্লাশি চালাতে শুরু করে। বেরোয় একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স। তা দেখেই ঘাবড়ে যায় পুলিশ। কারণ, লাইসেন্সে নাম লেখা বরিস জনসন। ছবিও ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীরই। এমনকি জন্মদিনটিও বরিসেরই। তা হলে কি ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসে এসে গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লেন! শুরু হয় তন্ন তন্ন করে তল্লাশি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই গাড়ির মালিককে পাওয়া যায়। তিনি দুর্ঘটনার পর মত্ত অবস্থায় গাড়ি ছেড়ে একটি সেতুর উপর এসে দাঁড়িয়েছিলেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি আদতে ইউক্রেনের বাসিন্দা।
পুলিশের মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা যখন ওই ব্যক্তিকে ধরি তখন তিনি নিজে থেকে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না। নিজেকেও চিনতে পারছিলেন না। মদ খেয়ে আছেন কি না নিশ্চিত হতে আমরা ব্রেথঅ্যানালাইজ়ার টেস্ট করতে বলি কিন্তু ওই ব্যক্তি তা নাকচ করে দেন। সবচেয়ে আজব ব্যাপার হল, ড্রাইভিং লাইসেন্সটির মেয়াদপূর্তির দিন হিসাবে লেখা ছিল ৩০০০ সাল। তা দেখেই পুলিশের সন্দেহ দৃঢ় হয়, ভুয়ো ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে ঘুরছেন তিনি। কারণ এত বছরের মেয়াদ কোনও লাইসেন্সেই থাকে না।
কোথা থেকে এল ভুয়ো লাইসেন্স! ডাচ পুলিশ তার সন্ধান জারি রেখেছে। এরই মধ্যে এনওএসের প্রাক্তন সাংবাদিক কিসিয়া হেকস্টার দাবি করেছেন, ইউক্রেনের দোকানে দোকানে ভুয়ো লাইসেন্স ঢেলে বিক্রি হয়। ধৃত ব্যক্তিও আদতে ইউক্রেনেরই বাসিন্দা।
পুলিশের মুখপাত্রকে যখন প্রশ্ন করা হয়, সত্যিই যদি বরিস জনসন স্টিয়ারিংয়ে থাকতেন, তখন কী করতেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমি যত দূর জানি, বরিস জনসন এই সময়ে নেদারল্যান্ডসে নেই।’’