হিন্টন জানিয়েছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার করে চলেছে সমাজের একাংশ। ফাইল চিত্র ।
সারাজীবন কাজ করেছেন কৃত্রিম মেধা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই) নিয়ে। ঝুলিতে রয়েছে একাধিক স্বীকৃতি এবং পুরস্কার। কিন্তু এখন নিজেই নিজের কাজের জন্য অনুশোচনা করছেন বিখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী তথা কৃত্রিম মেধা তৈরির ‘গডফাদার’ জিওফ্রে হিন্টন। ভয় পাচ্ছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে ভবিষ্যতে তৈরি হতে চলা পরিস্থিতি নিয়ে। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপকারিতা এবং ঝুঁকি নিয়ে নির্দ্বিধায় কথা বলার জন্য গুগল থেকে পদত্যাগ করেছেন হিন্টন।
হিন্টন এআই বিশেষজ্ঞ। ২০১৮ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে যুগান্তকারী কাজের জন্য ‘ট্যুরিং অ্যাওয়ার্ড’ জিতেছেন। কিন্তু এখন তাঁর দাবি, তিনি যে প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেছেন তার পরিণতি ভয়ঙ্কর।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে হিন্টন জানিয়েছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার করে চলেছে সমাজের একাংশ। ভুয়ো ছবি এবং খবর তৈরিতে যে ভাবে এআই ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হিন্টন। তিনি উল্লেখ করেছেন, এআই শিল্পে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ার কারণে সকলেই নতুন নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছেন। ফলে এর অপব্যবহারকে ঠেকানো অসম্ভব হয়ে উঠছে। তাঁর দাবি, কৃত্রিম মেধা বিশ্বকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে কোনটা ‘সত্য’ আর কোনটা ‘মিথ্যা’ তা খুঁজে বার করা ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে পড়বে।
হিন্টন কর্মসংস্থানের উপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কুপ্রভাব নিয়েও উদ্বিগ্ন। তিনি স্বীকার করেছেন, এআই-এর নিজস্ব ভাবে কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে। এমনকি মানুষের বুদ্ধিমত্তাকেও ছাপিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। ফলে বিশ্বব্যাপী ধীরে ধীরে বিভিন্ন সংস্থায় কর্মীছাঁটাই বাড়তে পারে। চাকরির অভাব দেখা দিতে পারে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক দশক আগে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা গুগলে যোগ দিয়েছিলেন হিন্টন। কেন গুগল ছাড়লেন সে সম্পর্কে অবস্থান স্পষ্ট করতে একটি টুইটও করেন তিনি। টুইটারে হিন্টন লিখেছেন, “আমি গুগল ছাড়লাম যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তৈরি হতে চলা সঙ্কটজনক পরিস্থিতি নিয়ে নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারি। এর প্রভাব যাতে গুগলে না পড়ে, তাই আমি সংস্থা থেকে পদত্যাগ করেছি। তবে আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে, এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুগল অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভাবে কাজ করেছে।’’