ছবি: রয়টার্স।
কখনও পাকিস্তান, কখনও চিন। ভারতের সঙ্গে দুই প্রতিবেশীর বিরোধে ‘সাহায্য’ করতে তাঁর আগ্রহের কথা আরও একবার স্পষ্ট করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার তিনি বলেন, ভারত-চিন সীমান্তে খুব খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। চিন এই পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ট্রাম্প জানান, দু’দেশ চাইলে আমেরিকা উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করতে প্রস্তুত। ভারত ও চিনের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা চলছে বলেও জানান তিনি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, এর আগেও একাধিক বার নয়াদিল্লি জানিয়েছে, এই ধরনের দ্বিপাক্ষিক বিরোধে তৃতীয় কোনও পক্ষের হস্তক্ষেপ ভারত চায় না। সেই অবস্থানের কোনও বদল হয়নি।
গত চার মাস পূর্ব লাদাখে ভারত ও চিনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। দু’দেশের সেনা একে অন্যের চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে। সেনা-সহ বিভিন্ন পর্যায়ে একাধিক বার আলোচনার পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। খোদ সেনাপ্রধান এমএম নরবণে শুক্রবার জানিয়েছেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পরিস্থিতি ভয়াবহ। তাঁর কথায়, ‘‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা এখন উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে রয়েছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে সেখানে প্রয়োজনীয় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।’’ দিন ছয়েক আগে প্যাংগং লেক এলাকায় জমি দখল করতে গিয়ে ভারতীয় সেনার প্রবল বাধায় পিছু হটতে বাধ্য হয় চিনা সেনা।
এর মধ্যেই শুক্রবার রাতে এক সাংবাদিক বৈঠকে চিনের আগ্রাসন এবং লাদাখে তাদের অতিসক্রিয়তার কড়া সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা এ দিকে নজর রাখছি। চিন ও ভারতের মধ্যে সীমান্তে সমস্যা খুবই খারাপ দিকে এগোচ্ছে।’’ ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই বিষয়ে চিন ও ভারত, দু’দেশের সঙ্গেই তাঁর কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই বিষয়ে ভারত ও চিন দু’দেশকেই সাহায্যের বার্তা দিয়েছি। যদি কিছু করতে পারি, তা হলে আনন্দের সঙ্গে তা করব। এই বিষয়ে দু’দেশের সঙ্গেই কথা বলছি আমরা।” এই প্রসঙ্গে ভারতের ভূমিকার প্রশংসাও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর আগে গত জুনে লাদাখের গালওয়ানে ভারত ও চিনা সেনার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরেও মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, “এই সমস্যা মেটাতে আমরা ভারত ও চিনের সঙ্গে কথা বলছি। প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করতেও রাজি।” তখনও লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনার জন্য চিনের আগ্রাসন নীতিকেই দুষেছিলেন ট্রাম্প। শুক্রবারও চিনের কড়া সমালোচনা করে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয় চিনের আগ্রাসন বেশি। অনেক বুঝতেও পারবে না, কতটা আগ্রাসন চিন দেখাতে পারে।”
আরও পড়ুন: স্বামীর খোঁচার পরে মুখে কুলুপ নির্মলার
সীমান্তে দু’দেশের মধ্যে এমন উত্তেজনার আবহেই চিনের অনুরোধে এবং রাশিয়ার মধ্যস্থতায় গত কাল মস্কোয় চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফংহ-র সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেখানে সীমান্ত নিয়ে নিজেদের কড়া অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারত।