প্রচণ্ড ওরফে পুষ্পকমল দহল নেপালের প্রধানমন্ত্রী। ফাইল ছবি।
প্রচণ্ড ওরফে পুষ্পকমল দহল নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেই ভারত এবং চিনের মধ্যে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছিল বলেই দাবি কূটনৈতিক শিবিরের।
এ বার বিষয়টি নিয়ে নিজেই সরব হলেন প্রচণ্ড। নেপালের পার্লামেন্টে আস্থাভোটে জয়ের পর তিনি জানিয়েছেন, নয়াদিল্লি এবং বেজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করে চলবে তাঁর সরকার। তবে একইসঙ্গে সরকারের ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচিতে বলা হচ্ছে, বেআইনি ভাবে দখল করে রাখা নেপালের ভূভাগ ফেরানোর জন্য আলোচনা শুরু করা হবে নয়াদিল্লির সঙ্গে। পাশাপাশি, চিনের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত নিয়ে বিতর্কের কোনও উল্লেখ কিন্তু রাখা হয়নি ওই জোট সরকারের কর্মসূচিতে।
সাম্প্রতিক কালে নানা কারণে এই প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে নেপালে নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার সময় সংবিধানের অন্তিম খসড়ায় ভারতের সীমান্তে উত্তর তরাই অঞ্চলে বসবাসকারী মদেশিয় এবং থারু নামক দুই প্রাচীন গোষ্ঠীর মানুষদের প্রান্তিকীকরণের সমস্যা অন্তর্ভুক্ত না হওয়াকে ভাল চোখে দেখেনি দিল্লি। এমনিতেই নিজেদের অধিকার নিয়ে সে দেশে বহু দিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন মদেশিয়রা। ওই ঘটনার পরে দিল্লির প্রচ্ছন্ন মদতে সীমান্তে তাঁদের অবরোধ বেশ কয়েক মাস ব্যাপক প্রভাব ফেলে দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জোগানের উপরে, যা তৎকালীন ওলি সরকারকে চিনের দ্বারস্থ হতে বাধ্য করে, এবং তীব্রতর করে ভারত-বিদ্বেষী মানসিকতা। ২০২০ সালে আবার দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত বিবাদ মাথাচাড়া দেয়, যখন বিতর্কিত কালাপানি অঞ্চলের কাছে লিপুলেখ পাসের সংলগ্ন ৮০ কিলোমিটার লম্বা রাস্তা নির্মাণ করে ভারত। ওই রাস্তা নির্মাণের জন্য তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ করে তৎকালীন নেপাল সরকার। ভারতীয় অঞ্চল লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ গিরিপথ এবং কালাপানি অঞ্চলকে সে দেশের অংশ হিসেবে নেপাল সংসদে প্রস্তাব পাশ করিয়েছিল ওলি সরকার।
ঘটনার নেপথ্যে সে সময় চিনের ‘ভূমিকা’ও উঠে এসেছিল। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে আগামী দিনে ফের বেজিংয়ের মদতে নয়াদিল্লি-কাটমান্ডু সম্পর্কে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। প্রচণ্ডের বক্তব্যে সেই আশঙ্কা দেখছে নয়াদিল্লি।