ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। —ফাইল চিত্র।
ইরানে একের পর এক ইজ়রায়েলি সেনার বিমান হামলার ঘটনায় তপ্ত পশ্চিম এশিয়া। পাল্টা হামলার হুমকিও দিয়েছে তেহরান। সেই আবহেই আমেরিকা স্পষ্ট জানিয়েছে, ইজ়রায়েলে হামলা চালানোর ‘ভুল’ যেন না করে ইরান। হুঁশিয়ারি, পাল্টা হুঁশিয়ারির আবহে অনেকেই মনে করছেন, ইরানে হামলা চালানোর নেপথ্যে রয়েছে আমেরিকাই! কিন্তু ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, আমেরিকার ‘হুকুম’-এ নয়, জাতীয় স্বার্থেই ইরানের হামলা চালিয়েছে তাঁর সেনাবাহিনী।
শনিবার ভোরে ইরানের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে পর পর বিমান হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। রাজধানী তেহরান এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে বার বার। ইজ়রায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরানে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ‘নির্দিষ্ট’ কিছু হামলা চালানো হয়েছে। যুদ্ধবিমান এবং কিছু ক্ষেত্রে ড্রোনের মাধ্যমে ঘটানো হয়েছে বিস্ফোরণ। ইজ়রায়েল দাবি করে, গত ১ অক্টোবর ইরান তাদের ভূখণ্ডে যে হামলা চালিয়েছিল, তারই প্রত্যাঘাত করল তারা। তবে অনেকে মনে করছেন আমেরিকার কথাতেই হামলা চালিয়েছে ইরান। এ বিষয়ে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়। সেই দাবি ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে দাবি করল নেতানিয়াহুর দফতর। জানানো হয়, ইজ়রায়েল ‘জাতীয় স্বার্থেই’ ইরানের উপর হামলা চালিয়েছে। আমেরিকার কথায় নয়।
ইজ়রায়েলি হামলার পরই আসরে নামে আমেরিকা। তারা দাবি করে, ইরানের জ্বালানি এবং পারমাণবিক কেন্দ্রে আঘাত না করার জন্য ইজ়রায়েলকে নিষেধ করেছে। এমনকি, পশ্চিমি দুনিয়ায় চলমান উত্তেজনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে পাশাপাশি ইরানকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। বলেছে, ইরান যেন পাল্টা হামলা না চালায়। আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের সঙ্গে শনিবারের হামলা নিয়ে কথা বলেছেন। তার পর অস্টিন বলেন, ‘‘পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকান সেনাবাহিনীকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট ভাল অবস্থানে রয়েছে ওয়াশিংটন। আমি একটা কথা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, ইজ়রায়েলের হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার ভুল যেন না করে ইরান। এই হামলা-পাল্টা হামলা এখানেই শেষ হওয়া উচিত।’’ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের উপর জোর দিচ্ছে আমেরিকা।
উল্লেখ্য, শনিবারের হামলার পর ইরান জানিয়েছিল, ইজ়রায়েলের যুদ্ধবিমান থেকে হামলায় তাদের খুব বড় কোনও ক্ষতি হয়নি। ‘সামান্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে বলে দাবি ছিল তাদের। জানিয়েছিল, ইরানের দু’জন সেনা ইজ়রায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন।