আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতির মাঝেই এ বার নতুন চিন্তা ইরানের। শরীর ভাল নেই দেশের শীর্ষনেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের। ইজ়রায়েলের সঙ্গে সংঘাতের আবহে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা করতে হচ্ছে ইরানকে। এরই মধ্যে চিন্তায় রাখছে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের শারীরিক অবস্থা। ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ, ৮৫ বছরের ‘বৃদ্ধ’ খামেনেইয়ের শরীর ভাল নেই। তিনি ‘গুরুতর অসুস্থ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে বার্ধক্যজনিত রোগেই ভুগছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে কে হবেন খামেনেইয়ের উত্তরসূরি? দেশের শীর্ষনেতার আসনে কে বসবেন? তা নিয়েও চোরাস্রোত বইতে শুরু করেছে ইরানে।
খামেনেইয়ের উত্তরসূরি হিসাবে তাঁর দ্বিতীয় পুত্র মোজতবা খামেনেই ইরানের ধর্মীয় শীর্ষনেতা হিসাবে দায়িত্ব নিতে পারেন বলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বছর পঞ্চান্নের মোজতবাকে নিয়েও ইরানের সব পক্ষ সন্তুষ্ট নয়। প্রকাশ্যে খুব একটা দেখা দেন না। তবে অন্তরালে থেকেই ইরানের রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে তাঁর।
ইরানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা কট্টরপন্থী নেতা ইব্রাহিম রইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর থেকেই মোজতবাকে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। সর্বোচ্চ নেতা খামেনেইয়ের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন রইসি। তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্তও চর্চা ছিল, খামেনেইয়ের পর রইসিই হতে পারেন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। তবে রইসির মৃত্যুর পর ইরানের শীর্ষনেতা হওয়ার দৌড়ে প্রথম নামই মোজতবার। বর্তমানে খামেনেইয়ের দফতরের কাজ বেশির ভাগই দেখাশোনা করেন তিনি। তবে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ, ইরানের মধ্যেই একাংশের মোজতবাকে নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা কে হবেন, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে ইরানের অন্দরে। পাশাপাশি উদ্বেগ রয়েছে খামেনেইয়ের শারীরিক অবস্থা নিয়েও।
গত মাসে ইজ়রায়েলি হামলায় ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র সংগঠন হিজ়বুল্লার প্রধান সৈয়দ হাসান নাসরাল্লার মৃত্যু হয়েছিল। হিজ়বুল্লা প্রধানের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছিল ইরানে। সে দেশের দুই সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনেইকে গোপন এবং নিরাপদ আস্তানায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর কয়েক দিন পরেই অক্টোবরের শুরুর দিকে তেহরানে জুম্মার নমাজের খুতবায় (পাঠ করানোর অনুষ্ঠান) অংশ নিয়েছিলেন খামেনেই। ইজ়রায়েলকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন সেখান থেকে। অনুমান করা হয়, তিনি যে লুকিয়ে নেই— সেই বার্তা দেওয়ার জন্যই ওই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা।