আদানির তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে কয়লার চড়া দরে অখুশি হাসিনা সরকার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কে বলে বাঙালি ব্যবসা বোঝে না? কারা অভিযোগ করেন, সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিতে বাঙালি গড়িমসি করে? বিপাকে পড়া আদানি গোষ্ঠীকে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কয়লার দাম কমানোর কথা বলে শেখ হাসিনার সরকার বুঝিয়ে দিল, কর্পোরেট সংস্থার মতোই দ্রুত সাহসী আর্থিক পদক্ষেপ করতে তারা সক্ষম।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী নসরুল হামিদকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কয়লার আমদানি মূল্য কমানোর জন্য আলোচনা চেয়ে আদানি গোষ্ঠীকে চিঠি দিয়েছে তারা। হামিদ বলেছেন, ‘‘পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আমরা কম দামে কয়লা পাচ্ছি। আদানির ক্ষেত্রেও ওই দামেই কয়লা পাওয়ার জন্য আমরা আলোচনার পথে হাঁটতে চাই।’’
২০১৭ সালের নভেম্বরে আদানি গোষ্ঠীর শক্তি সংস্থার সঙ্গে ২৫ বছরের বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিপি)। সেই অনুযায়ী ঝাড়খণ্ডের গোড্ডার প্রায় ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লানির্ভর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। মুর্শিদাবাদ সীমান্ত হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং বগুড়ায় পৌঁছবে সেই বিদ্যুৎ। মার্চ মাস থেকেই সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা।
কিন্তু গোল বেধেছে কয়লার দাম নিয়ে। সে দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির জন্য বাংলাদেশ যে দরে কয়লা কেনে, আদানির কারখানায় টন প্রতি কয়লার দর প্রায় ১০০ ডলার (৮,২২৩ টাকা) বেশি পড়ছে। ফলে বেড়ে যাবে বিদ্যুতের দাম। এই পরিস্থিতিতে হামিদ জানিয়েছেন, ‘নিউক্যাসেল সূচক’ অনুসরণ করে আমদানি করা কয়লার দাম নির্ধারণের জন্য আদানি গোষ্ঠীর কাছে বার্তা দিয়েছেন তাঁরা।
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে শেয়ার বাজারে টানা রক্তক্ষরণ চলছে আদানি গোষ্ঠীর। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিপি)-এর তরফে ছ’বছরের পুরনো চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করে কয়লার দাম কমানোর জন্য আলোচনার দাবিতে ‘ব্যবসায়িক’ চিঠি, গৌতম আদানির সংস্থার উপরে চাপ আরও বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।