আদানি টোটাল গ্যাসে ফরাসি সংস্থা টোটাল এনার্জিসের ৩৭ শতাংশেরও বেশি শেয়ার রয়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে শেয়ার বাজারে টানা রক্তক্ষরণ চলছে আদানি গোষ্ঠীর। আদানি পোর্টস, এন্টারপ্রাইজ়েস-সহ গোষ্ঠীর চারটি সংস্থার শেয়ার দর শুক্রবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি পাওয়ার, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি উইলমার, আদানি ট্রান্সমিশন-সহ বেশ কিছু সংস্থার শেয়ার অনেকটাই পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ফরাসি সংস্থা টোটাল এনার্জি জানিয়েছে, আদানি টোটাল গ্যাসে তাদের শেয়ার রাখার বিষয়টি নতুন করে বিবেচনা করা হয়নি। শুক্রবার সংস্থার তরফে জানানো হয়, এখনও তারা আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করেনি। প্রসঙ্গত, আদানি টোটাল গ্যাসে ফরাসি সংস্থা টোটাল এনার্জিসের ৩৭ শতাংশেরও বেশি শেয়ার রয়েছে। টাকার অঙ্কে প্রায় ২ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি। তারা সরে গেলে আদামি সাম্রাজ্যের আর্থিক ভিত্তি আরও কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
শেয়ার বাজারে ধসের জেরে বুধবার রাতে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের ২০,০০০ কোটি টাকার নতুন শেয়ার ছাড়ার (এফপিও) প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানি ভিডিয়ো বার্তায় তাঁর সংস্থার ওই সিদ্ধান্তের কারণও ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু শুক্রবার আমেরিকার ডাও জোন্সের ‘সাসটেনেবিলিটি সূচক’ (আর্থিক, সামাজিক বা পরিবেশগত স্থিতিশীলতার বিচারে বিশ্বের সেরা সংস্থাগুলিকে নিয়ে তৈরি শেয়ার সূচক) থেকে আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। যা আদানি গোষ্ঠীর কাছে বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বৃহস্পতিবারই আদানি গোষ্ঠীর অন্তত দু’টি সংস্থা আমেরিকায় তাদের বন্ডগুলিতে লগ্নিকারীদের কুপনের সাহায্যে ডলার মারফতই নির্ধারিত মূল্য মিটিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে আমেরিকার শেয়ার সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্টে দাবি করেছিল, এক দশক ধরে শেয়ারের দরে কারচুপি করছে আদানি গোষ্ঠী। ২৪ জানুয়ারি ওই রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকেই আদানিদের ১০টি সংস্থার শেয়ারে ধস নামে। প্রাথমিক ভাবে আদানিরা বিবৃতিতে অভিযোগ করে, হিন্ডেনবার্গ স্বল্পমেয়াদি মুনাফার জন্য রিপোর্ট তৈরি করেছে। এটা ভারতের অগ্রগতিকে রোখার চক্রান্ত। এই আক্রমণাত্মক বিবৃতি সত্ত্বেও অবশ্য হাল ফেরেনি। উপরন্তু, হিন্ডেনবার্গ পাল্টা বলে, জাতীয়তাবাদের আড়ালে প্রতারণা ঢাকা দেওয়া যায় না।